পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘সবুজশ্রী’ প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্য সরকার গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিলেও, পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে একটি অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটেছে। বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই শতাধিক গাছ কেটে ফেলা হয়, যার জন্য মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ভাই রহমতুল্লা চৌধুরীর নাম উঠে এসেছে। এই ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং বর্তমানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে উত্তরের দাবি উঠেছে।
গাছ কাটার অনুমতি নিয়ে সমস্যা
পূর্বস্থলীর চৌরঙ্গী এলাকার ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে কয়েকদিন ধরে গাছ কাটা হচ্ছিল। বন দফতরের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা হচ্ছে, এমন অভিযোগ পাওয়ার পর, স্থানীয় বন বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখানে উপস্থিত শ্রমিকরা জানায়, তারা কাটোয়া রেঞ্জারের অনুমতিতে গাছ কেটে যাচ্ছেন, কিন্তু কোন অনুমতির কাগজপত্র তাদের কাছে ছিল না।
মন্ত্রীর ভাই রহমতুল্লা চৌধুরীর ভূমিকা
এলাকাবাসী ও বন বিভাগের কর্মীরা জানতে পারেন যে, গাছ কাটার কাজের মূলে রয়েছেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ভাই রহমতুল্লা চৌধুরী। এ বিষয়টি সামনে আসতেই বন বিভাগের কর্মীরা বিষয়টি তদন্ত শুরু করেন। রহমতুল্লা চৌধুরী এই গাছ কাটানোর অনুমতি নিয়েছেন বলে জানা যায়। তবে, পরে তিনি স্বীকার করেন যে, তার ভুল হয়ে গিয়েছে এবং তিনি জরিমানা মিটিয়ে এসেছেন।
বন দফতরের প্রতিক্রিয়া
জাহান্নগর বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাছ কাটার কাজটি বন দফতরের অনুমতি ছাড়া চলছিল। বন দফতরের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে জরিমানা হিসেবে ২৪ হাজার ৪৪৭ টাকা নেওয়া হয়েছে। কাটোয়া রেঞ্জার শিবপ্রসাদ সিনহা জানান, অনুমতি না নিয়ে গাছ কাটা হচ্ছিল, এ কারণে জরিমানা করা হয়েছে।
অভিযোগ ও জরিমানা
এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন যে, বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই শতাধিক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এই ঘটনায় মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ভাই রহমতুল্লা চৌধুরী জরিমানা দিয়ে নিস্কৃতি পেয়েছেন। তবে, বিষয়টি এখনও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
এলাকার প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ
পূর্বস্থলী পঞ্চায়েতের প্রধান অনিন্দিতা রায় জানান, “বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই এভাবে গাছ কাটা ঠিক কাজ হয়নি। এতে এলাকার মানুষজন ও গাছপ্রেমীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।” স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করছেন, এই ধরনের অব্যবস্থাপনা পরিবেশের ক্ষতি করতে পারে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দেওয়া যাবে না।