কৃষকসেতু, কৃষ্ণ সাহা:- দিঘায় পর্যটকদের অভিযোগের ভিত্তিতে কড়া পদক্ষেপ নিল রাজ্য প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শনিবার থেকে দিঘা ও শঙ্করপুর এলাকার সমস্ত হোটেলে ঘর ভাড়ার তালিকা বাধ্যতামূলকভাবে ঝোলানোর নির্দেশ কার্যকর হয়েছে। নির্দেশ না মানলে জরিমানা আদায় করছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (DSDA)।

সম্প্রতি পর্যটকদের ভিড় বাড়তেই হোটেলগুলিতে ঘরের ভাড়া বেড়েছে কয়েকগুণ। অভিযোগ, ৫০০-৭০০ টাকার ঘরের জন্য পর্যটকদের কাছ থেকে ২০০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত দাবি করা হচ্ছিল। অনেকেই ভিড় ও অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে হোটেল না পেয়ে সৈকতের ধারে রাত কাটাতে বাধ্য হন। এমন অভিযোগ পৌঁছেছিল প্রশাসনের কাছে।
গত ৩০ এপ্রিল দিঘায় নতুন জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই সপ্তাহজুড়ে পর্যটকের ঢল। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু হোটেল মালিক ‘ঝোপ বুঝে কোপ’ মারছেন বলে অভিযোগ। দুর্গাপুর থেকে ঘুরতে আসা মানিক রায় বলেন, “অগ্রিম বুকিং না করে আসায় হোটেল পাইনি। শেষে দ্বিগুণ ভাড়ায় এক হোটেলে উঠতে হয়েছে, তারাও বিল দেয়নি।” অন্য এক পর্যটক শেখ আজগর জানান, “দুই হাজার টাকার ঘরের ভাড়া বলা হয়েছিল তিন হাজার টাকা। দু’দিন থাকার শর্তে ৫০০ টাকা কমানো হয়েছিল।”
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার নবান্নে রথযাত্রা প্রস্তুতি বৈঠকে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সামনে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং হোটেল ভাড়ার নিয়ন্ত্রণে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর শুক্রবার দিঘায় হোটেল মালিক ও টোটো-অটো চালকদের সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রশাসনিক কর্তারা।
কাঁথির মহকুমা শাসক প্রতীক অশোক ধুমাল বলেন, “সমস্ত হোটেল মালিকদের ঘরভাড়ার তালিকা চূড়ান্ত করতে বলা হয়েছে। যারা তালিকা ঝোলাচ্ছে না, তাদের DSDA জরিমানা করছে।”
হোটেল মালিক সংগঠনও স্বীকার করেছে, ছোট হোটেলগুলিতে এখনও অনিয়ম চলছে। নিউ দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের সভাপতি অশোককুমার চন্দ বলেন, “বড় হোটেলগুলিতে নির্দিষ্ট ভাড়ার তালিকা থাকলেও ছোটখাটো হোটেলগুলিতে বেনিয়ম চলছে। নির্দেশ মেনে এখন সবাইকে ভাড়ার তালিকা ঝোলাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটকদের নাম ও ঠিকানা নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড না করলে ৫০০ টাকা করে জরিমানা ধার্য করা হচ্ছে।”
প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন পর্যটকরা। তবে এই নিয়ম বাস্তবায়ন কতটা কঠোরভাবে হয়, তার দিকেই তাকিয়ে সকলে।