পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী সাংসদ মহুয়া মৈত্র ব্যক্তিগত জীবনে এক বড় পরিবর্তনের পথে হাঁটলেন। সদ্যপ্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, তিনি ওড়িশার বিজু জনতা দলের (BJD) প্রাক্তন সাংসদ পিনাকী মিশ্রের সঙ্গে জার্মানির বার্লিন শহরে গাঁটছড়া বাঁধলেন। এই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনীতির অন্দরে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।

দু’জনেই দেশের রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ মুখ। মহুয়া মৈত্র ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ থেকে লোকসভায় নির্বাচিত হয়ে দৃঢ়চেতা এবং স্পষ্টভাষী এক নেত্রী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্য ও সাহসী রাজনৈতিক অবস্থান তাকে আলাদা করে চিনিয়েছে। অপরদিকে, পিনাকী মিশ্র চারবার পুরী থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে দক্ষতা ও সাফল্যের ছাপ রেখে গেলেও, সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কিছু দলীয় মতবিরোধে জড়িয়ে পড়েন।
এই দুই রাজনৈতিক চরিত্র—একজন তৃণমূল নেত্রী, অপরজন বিজু জনতা দলের প্রাক্তন সাংসদ—এক সময় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও, ধীরে ধীরে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে জড়ান। পরে তা রূপ নেয় প্রেমে এবং শেষপর্যন্ত বিয়েতে।
তবে সব চেয়ে নজরকাড়া বিষয়, তাদের এই বিয়ে হয়েছে বিদেশে—বার্লিনে, একেবারে ব্যক্তিগত পরিসরে। কোনও জাঁকজমক নয়, বরং শুধু পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুর উপস্থিতিতেই সম্পন্ন হয়েছে বিয়ের অনুষ্ঠান। এই ‘নিমগ্ন’ ধরনের বিয়ে অনেককেই চমকে দিয়েছে, এবং রাজনীতির মাঠে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
এই বিয়ে তাদের রাজনৈতিক অবস্থানে সরাসরি প্রভাব ফেলবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে মহুয়া মৈত্র যেহেতু তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম মুখ, তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, এই সম্পর্ক উড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির মধ্যে এক নতুন সেতুবন্ধ তৈরি করতে পারে।
তবে সব কিছু ছাপিয়ে, এই সম্পর্ক রাজনীতির সীমারেখার বাইরের একটি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। মহুয়া মৈত্র ও পিনাকী মিশ্র দু’জনেই প্রমাণ করেছেন যে, রাজনীতির বাইরেও তাদের মানবিক জীবন রয়েছে, যেখানে ভালোবাসা, বোঝাপড়া, এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাই মূল ভিত্তি।
এখন দেখার বিষয়, এই দাম্পত্য জীবন কীভাবে প্রভাব ফেলবে তাদের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কর্মকাণ্ডে। রাজনৈতিক মহলের চোখ এখন সেই দিকেই।