কৃষ্ণ সাহা
মা-বাবা নিরক্ষর মাটির ঘরে বাস করে ও স্কুলের মাধ্যমিকের ৬৫৭ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে নিল অনিরুদ্ধ কাইতি। পার্শ্ব শিক্ষক হিসেবে সেভাবে ছিলেন না কেউ। শুধুমাত্র গণিত ও ইংরেজি দেখিয়ে দিতেন দুই শিক্ষক। বাকি সাবজেক্টগুলো বাড়িতে নিজে পড়ে মাধ্যমিকে সাফল্য অর্জন করেছে সে। সারাদিনে ১৩ থেকে ১৪ঘণ্টা পড়াশোনা স্কুলে যাওয়া দারিদ্রতার সঙ্গে বড় হয়ে সাফল্যে একধাপ এগিয়ে গেল অনিরুদ্ধ। পূর্ব বর্ধমান জেলার গোপালবেরা গ্রামের বাসিন্দা অনিরুদ্ধ কাইতি গোপালবেড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। তার সাফল্যে শিক্ষক মহাশয় এরা খুবই আনন্দিত। বিগত বছরগুলোর মাধ্যমিকের ফলাফলের তুলনায় এ বছরের ফলাফল ছাপিয়ে গিয়েছে।
এত দুস্থ পরিবারের থেকেও শুধুমাত্র মেধার জোরে সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে অনিরুদ্ধ।ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষিত হয়ে পদার্থবিদ হতে চায় সে। তবে তার উচ্চশিক্ষায় বাধ সেধেছে দারিদ্রতা। মাটির ঘর,বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি এবং ১00 দিনের কাজের শ্রমিক। মা বাড়িতে কাজ করে কোন রকমে সংসার চালান।মামার বাড়ি থেকে কিছু কিছু সাহায্য আসে ঠিকই তবে তা উচ্চশিক্ষার জন্য যথেষ্ট নয় বলে জানান অনিরুদ্ধর মা। ঘর বাড়ির অবস্থা যথেষ্ট খারাপ বর্ষাকালে ঘরের ভেতর জল ঢুকে যায়। একরাশ ইচ্ছে আর দারিদ্রতাকে সঙ্গে করে কিভাবে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে অনিরুদ্ধ, তা ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না মা বাবা। যদিও গ্রামের কিছু মানুষ পাশে দাঁড়িয়েছেন অনিরুদ্ধর।
স্কুলে কলেজে পড়ার জন্য যেটুকু খরচ তার কিছু অংশ তারা দেবেন বলে জানিয়েছেন।এছাড়াও ব্যক্তিগত অন্যান্য দিক থেকে যদি কোন সাহায্য লাগে তবুও পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন খণ্ডঘোষ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ তপন কুমার ঘোষ। খণ্ডঘোষ পঞ্চায়েত সমিতি শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ ও গোপালবেড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান আজ অনীরুদ্ধকে পুষ্পস্তবক দিয়ে সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করেন। এত সাফল্যের পরে অনিরুদ্ধ তার স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা মা বাবা মামার বাড়ির লোকজনসহ গ্রামবাসীদের সাহায্য ভোলেনি। সে সকলকেই ধন্যবাদ জানিয়েছে।