রাজ্যে এখনও দুর্যোগ কাটছে না। বর্তমান নিম্নচাপের প্রভাবে কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত চলবে। মঙ্গলবার আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ায় অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২৫ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ চতুর্থীর দিন বঙ্গোপসাগরে নতুন একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে।
আবহাওয়া দপ্তরের আঞ্চলিক অধিকর্তা হাবিবুর রহমান বিশ্বাস জানান, বর্তমান নিম্নচাপটি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর ওড়িশা এবং উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা এটি সেখানেই সক্রিয় থাকবে, এরপর ধীরে ধীরে দুর্বল হবে। এর ফলে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে অতি ভারী বৃষ্টিপাত এবং কলকাতায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আগামীকাল পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার রাতে হওয়া প্রবল বৃষ্টিকে নিয়ে অনেকের প্রশ্ন ছিল এটি ক্লাউড ব্লাস্ট কি না। তবে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, “একেবারেই না”। দফতরের দাবি, নিম্নচাপের ফলে ঘনীভূত মেঘ থেকে এত বৃষ্টি হয়েছে। রেকর্ড অনুযায়ী, সোমবার ২৫১ মিলিমিটার বৃষ্টি নথিভুক্ত হয়েছে। ১৯৭৮ ও ১৯৮৬ সালের সেপ্টেম্বরে এমনই প্রবল বর্ষণ হয়েছিল। সামগ্রিকভাবে এবারের বৃষ্টিপাত ষষ্ঠতম রেকর্ড বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর।
এই নিম্নচাপ দুর্বল হলেও ২৫ সেপ্টেম্বর চতুর্থীর দিন বঙ্গোপসাগরে নতুন একটি নিম্নচাপ তৈরি হবে বলে অনুমান। উত্তর-পশ্চিম ও মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে সেটি ধীরে ধীরে পশ্চিমমুখী হয়ে শুক্রবার পঞ্চমীর দিন গভীর নিম্নচাপে রূপান্তরিত হবে। এর প্রভাব পড়বে দক্ষিণ ওড়িশা এবং উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে। ষষ্ঠীর দিন এটি স্থলভাগে প্রবেশ করবে।
এই কারণে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় বজ্রঝড়-সহ বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শনিবার বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বাকি জেলাগুলিতেও বজ্রঝড়-সহ বৃষ্টি চলবে। তবে উত্তরবঙ্গে আপাতত ভারী বৃষ্টির কোনো সতর্কতা নেই। মালদহ ও দুই দিনাজপুরে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে।