সংগীতা চৌধুরী (বহরমপুর ) :- অনেক সময় অনেকের মনে অনেক রকম প্রশ্ন এসে হাজির হয়, সেই সকল প্রশ্নগুলির মধ্যে একটি প্রশ্ন হল- শ্রীকৃষ্ণ ইচ্ছা করলে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ বন্ধ করতে পারতেন কিন্তু তিনি তা করেননি কেন?
স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজ এই প্রসঙ্গে খুব সুন্দর ভাবে উত্তর দিয়েছেন এবং বুঝিয়ে বলেছেন। মহারাজের কথায়,“তিনি চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু দুর্যোধন যুদ্ধ ছাড়া রাজি হননি। আরও কিছু কারণ ছিল। শান্তিদূত হয়ে ধৃতরাষ্ট্রের রাজসভায় গিয়ে শ্রীকৃষ্ণ বোঝাতে চেয়েছেন দুর্যোধনকে,পরে মাত্র পাঁচটি গ্রাম দিতে বলেছেন। তারপর ধৃতরাষ্ট্র, ভীষ্ম, দ্রোণ, কৃপ প্রমুখকে অনুরোধ করেন দুর্যোধনকে বোঝাতে। শেষে নিজের দিব্য রেখেছিলেন সবাইকে, কিন্তু দুর্যোধন কোন কথা না শোনায় যুদ্ধ অনিবার্য হয়।
শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে যুদ্ধে অনুপ্রাণিত করেন, নাহলে শুভ শক্তি (পান্ডবদের) দুর্বল ও ভীতু বলে মনে করতো সমাজ। শ্রীকৃষ্ণ নিরপক্ষ, তিনি অন্যায় ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে বলেছেন,ভয় পেয়ে যুদ্ধ থেকে সরে থাকাকে তিনি সমর্থন করেননি। তাঁর কথার তাৎপর্য, যুদ্ধকে ভয় পেলে জীবন কাটবে মৃতের মতো। লড়াই করোনা কিন্তু প্রয়োজন হলে লড়ো, বিশেষ করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে। চেঙ্গিজ খাঁ ও হিটলার দুইজনই যুদ্ধ করেছেন নিজের স্বার্থে আর শ্রীকৃষ্ণ যুদ্ধ করতে বলেছেন ন্যায়ের জন্য। শান্তির নামে পলায়নী মনোবৃত্তিকে নিন্দা করেছেন তিনি।”
মহারাজের কথায়,আজও অনেকে প্রশ্ন করেন যে সৎ লোকেরা অত্যাচারিত হয় কেন? তার উত্তরে বলতে হয়,তারা শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ বোঝেনি বলে ও গীতার তাৎপর্য বোঝেনি বলে।