বাবু সিদ্ধান্ত বর্ধমান
লকডাউন চলায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে মহাজনরা।সেই কারণে তাঁত বুনে জীবিকা নির্বাহের পথও বন্ধ হয়েগেছে তাঁতিদের। রেশনের সমান্য চাল আর আটা টুকু দিয়ে তাদের কয়েকদিনের অন্নের সংস্থান হয়েছিল।এখন চালের হাঁড়িও ফাঁকা।এই পরিস্থিতিতে এক প্রকার অভুক্ত থেকেই দিন কাটছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের দক্ষিনশুড়া গ্রামের প্রায় দেড় শতাধীক তাঁতি পরিবারের ।
খাদ্যের জন্য তারা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহয্যা প্রার্থনা করেছেন ।একই সঙ্গে তারা জানিয়ে দিয়েছেন ,প্রশাসন তাঁদের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা না করলে স্বপরিবার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা। দক্ষিনশুড়া
গ্রামের তাঁতিরা এমন হুঁসিয়ারির দেবার পরেই নড়ে চড়ে বসেছে প্রশাসন ।

জামালপুর ব্লকের চকদিঘী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম দক্ষিনশুড়া। এই গ্রামের সিংহভাগ পরিবারের সদস্যাই পেশায় তাঁতি ।
লকডাউনের জেরে এখন তাঁত বোনা থমকে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েগেছেন তাঁতিরা। দক্ষিনশুড়া গ্রামের তাঁতি উত্তম গুঁই ,বলাইলাল দাস প্রমুখরা বলেন , লকডাউন ঘোষনার পর থেকেই সব মহাজনরা তাঁদের দিক থেকে
মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। বন্ধ করে দিয়েছে সুতো দেওয়া ।সেকারণে তাঁত বুনে জীবিকা নির্বাহের পথ হারাতে হয়েছে গ্রামের প্রায় দেড় শতাধীক তাঁতি পরিবারকে।
উত্তম গুঁই জানান , লকডাউনের দিন গুলিতে পরিবারের সবার মুখে যাতে অন্ন তুলে দিতে পারেন সেইজন্য মহাজনের কাছে আগাম কিছু অর্থ চেয়ে ছিলেন । মহাজনকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন পরে কাজ করে সেই টাকা শোধ করেদেবেন বলে।কিন্তু মহাজনরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন , ‘কাপড়ের বিক্রীবাটা সবই এখন বন্ধ রয়েছে। তাই সুতো নিতে আসতে হবে না। টাকা পয়সাও দিতে পারবেন না বলে মহাজন জানিয়ে দেয়’।
উত্তম গুঁই বলেন , মহাজন এমনটা জানিয়ে দেওয়ায় তাঁরা সকল তাঁতিরা আরো বিপাকে পড়ে গিয়েছেন ।রোজগারের সব পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন পরিবারের সকলের অন্নের সংস্থান করাই দুরহ হয়ে উঠেছে। অপর তাঁতি বলাইলাল দাস বলেন , রেশন দেওয়া শুরু হবার পর ২ কেজি চাল আর ৩ কেজি আটা পেয়েছিলেন । সরকারী ভাবে কোন ত্রাণ না মেলায় রেশনের সামান্য খাদ্যদ্রব্য দিয়েই এখন একবেলা খেয়ে পরিবারের দিন কাটছে ।


এরপর কি হবে তা ভেবে কুল কিনারা উদ্ধার করতে পারছেন না। বলাইবাবু জানান , ‘লকডাউনের কারণে জেলার সর্বত্রই তাঁতি পরিবার গুলিতে দুর্বিসহ পরিস্থিতি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ।প্রশাসন খাদ্যের ব্যবস্থা না করলে এই লকডাউনে দক্ষিনশুড়া গ্রামের তাঁতি পরিবারের সদস্যদের শেষপর্যন্ত আত্মহত্যার পথই বেছে নিতে হবে । ’
জামালপুর ব্লকের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার এই বিষয়ে বলেন , দক্ষিণশুড়া এলাকার তাঁতি পরিবারের সদস্যদের সমস্যার কথা জানতে পেরেছি ।খাদ্যের অভাবে তাঁতি পরিবারের সদস্যদের কাউকে যাতে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে না হয় তার জন্য সরকারের তরফে যা যা করনিয় তা করা হবে ।