পূর্ব বর্ধমানের ভাতার ব্লকের রামপুর গ্রামের গুপ্ত বাড়িতে আশি বছরের ঐতিহ্য বহন করে আজও একই জাঁকজমকের সঙ্গে পালিত হয় বনেদি লক্ষ্মীপুজো। এই পুজো শুধু ধর্মীয় আচার নয়, এক সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়েছে বহুদিন ধরেই।

পুজোর যাবতীয় প্রস্তুতি ও আচার অনুষ্ঠান আজও সামলান পরিবারের মহিলারা নিজের হাতে। তিন থেকে চার দিন ধরে চলে পুজোর কর্মযজ্ঞ—বাড়ির আঙিনায় ভিড় জমান আত্মীয়স্বজন ও এলাকার মানুষজন।
পুজো উপলক্ষে বাড়ির পক্ষ থেকে নেওয়া হয় একাধিক মানবিক উদ্যোগ। কয়েক হাজার মানুষের হাতে নতুন বস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, বিনামূল্যে স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হয় স্থানীয়দের জন্য। গ্রামের দরিদ্র ও অসহায় মানুষ এই উদ্যোগের ফলে বিশেষভাবে উপকৃত হন।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা গুপ্ত পরিবারের সদস্যরা প্রতি বছর পুজোর সময় গ্রামে ফিরে আসেন—এই মিলনমেলা যেন পরিবারের এক বড়ো উৎসব। শুধু পরিবারের সদস্যরাই নন, পুজো ঘিরে জমে ওঠে এলাকার সাংস্কৃতিক আবহও। বোম্বে ও কলকাতা থেকে আগত স্বনামধন্য শিল্পীরা অংশ নেন বিচিত্রা অনুষ্ঠানে, যা পুজোর অন্যতম আকর্ষণ।
এছাড়াও, গুপ্ত পরিবারের পক্ষ থেকে হাজার হাজার ভক্তের জন্য ভোগ বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়। গ্রামের মানুষ ও আশেপাশের এলাকা থেকে হাজারো দর্শনার্থী ভিড় জমান এই বনেদি পুজোকে ঘিরে।
গুপ্ত পরিবারের এই পুজো তাই শুধু একটি পারিবারিক ঐতিহ্য নয়, ভাতার তথা পূর্ব বর্ধমানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরও এক উজ্জ্বল প্রতীক হয়ে উঠেছে বছর বছর ধরে।