ধর্ষণ, গর্ভপাত, হুমকি ও প্রতারণার অভিযোগে তলব করা হলো বিতর্কিত ধর্মগুরু কার্তিক মহারাজকে। এক জুলাই, তাঁকে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানায় হাজিরা দিতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ২৬ জুন এক মহিলা নবগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি জানান, ২০১৩ সালে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন কার্তিক মহারাজ। এমনকি জোর করে গর্ভপাত করানোর চেষ্টাও করেন বলে অভিযোগ। এ ছাড়া হুমকি, অপমান ও প্রতারণার কথাও অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি। এই ভিত্তিতে IPC-র একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে—ধর্ষণ (৩৭৬(২)), গর্ভপাত করানো (৩১৩), হুমকি (৫০৬), ও প্রতারণা (৪১৭)।
তবে অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন কার্তিক মহারাজ। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ব্রহ্মাস্ত্র প্রয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, সত্যেরই জয় হবে। আইন আইনের পথেই চলবে”।
অন্যদিকে অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাঁর আশঙ্কা, যে কোনও সময় তাঁর উপর আক্রমণ হতে পারে। সেই কারণে পুলিশ তাঁকে নিরাপত্তা দিয়েছে বলেও জানা গেছে।
এই ঘটনার রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াও শুরু হয়েছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “পুলিশ যেন নিরপেক্ষ তদন্ত করে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এতদিন চুপ ছিলেন—তখন অভিযোগ এল না, এখন মুখ খুলতেই কেন এই অভিযোগ? এটা কি হিন্দুদের পক্ষে কথা বলার জন্য এক চক্রান্ত”?
জবাবে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, “মহিলার অভিযোগ শুনেও সুকান্ত মজুমদার কীভাবে তাঁর পক্ষে কথা বলেন? বিজেপির মদতেই মহারাজ সাহস পেয়েছেন। ধর্মকে কলুষিত করছে এই লোকেরা।” পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এত গুরুতর অভিযোগ সত্ত্বেও এখনও কেন গ্রেফতার করা হয়নি কার্তিক মহারাজকে”?
এই মন্তব্যের পরেই পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে মহারাজকে তলব করে নোটিস পাঠায়।