পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার বড়বেলুন গ্রামে ক্যান্সার আক্রান্ত এক রোগী ও তাঁর পরিবারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই নেতা জমি দখল করতে চেয়ে গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। ভয়ে কাঁপা রোগীর পরিবার ভাতার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্ত নেতার নাম রাজকুমার হাজরা। জানা গিয়েছে, বড়বেলুন গ্রামের বাসিন্দা পার্থসারথী চক্রবর্তীর এক টুকরো জমি ঘিরে গোটা ঘটনা। ক্যান্সারে আক্রান্ত পার্থসারথীবাবু চিকিৎসার খরচ চালাতে জমিটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। তিনি গ্রামেরই পরিচিত সুদেব রেজ-এর সঙ্গে বিক্রির চুক্তি করেন ও বায়না নেন। অভিযোগ, এরপর ২৪ মে রাজকুমার হাজরা কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে চক্রবর্তী পরিবারকে ভয় দেখাতে তাঁদের বাড়িতে হাজির হন। সে সময় বাড়িতে ছিলেন পার্থসারথী চক্রবর্তী, তাঁর স্ত্রী ও পুত্রবধূ। অভিযোগ, তাঁদের হুমকি দিয়ে রাজকুমার হাজরা বলেন, “জমি আমাকে লিখে দিতে হবে, না হলে গ্রামছাড়া করে দেব, জেলে ঢোকাব। আমি বিজেপির নেতা, আমার হাত কত দূর পৌঁছয় তা তোমরা জানো না”।
পরিবারের তরফে আরও অভিযোগ, ফোনেও একাধিকবার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় পার্থসারথীর ছেলে পল্লব চক্রবর্তী ২৯ মে ভাতার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি অভিযোগে রাজকুমার হাজরাকে ‘সমাজবিরোধী’ বলে উল্লেখ করেন। জমির ক্রেতা সুদেব রেজ-এর স্ত্রী বৈশাখী রেজও রাজকুমার হাজরার বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ এনেছেন। তাঁর দাবি, ২৭ মে রাজকুমার হাজরা তাঁর মা এবং আরও কয়েকজনকে নিয়ে তাঁদের বাড়িতে এসে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং হুমকি দেন। বৈশাখীদেবীর কথায়, “আমার স্বামী যেন কোনোভাবেই ওই জমি না কেনে, না হলে আমাদের ছেলেকে মেরে ফেলা হবে এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে স্বামীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করানো হবে”। রাজকুমার হাজরাকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিক্রিয়া দিতে অস্বীকার করেন। তাঁর মন্তব্য, “কে কী বলল, তাতে কিছু যায় আসে না। আমি এ বিষয়ে মিডিয়ার সঙ্গে কিছু বলব না”।ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। স্থানীয় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
