আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

জামাই ষষ্ঠী মিটতে না মিটতে ভ্যান গাড়িতে ৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা দরের জামাই ফেরি ফেরিওয়ালার

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ১৭ জুন

কপালে চন্দনের আঁকিবুকি নিয়ে মাথায় টোপর চাপিয়ে ধুতি পাঞ্জাবি পরিহিত ’বর বাবাজীবনরা’ বসে আছে ভ্যান গাড়িতে। রীতিমতো মাইকে হাঁক পেড়ে সেইসব বর অর্থাৎ জমাইদের ফেরি করছেন ফেরিওয়ালা।তাঁদের কারুর দাম ৫০০০ ,আবার কারুর কারুর দাম ২০০০ এবং ১০০০ টাকা।সস্তার ৫০০ টাকা দামের বরও ফেরিওয়ালার কাছে রয়েছে।তবে সেই বরের কোন ’গ্যারান্টি’ নেই বলেই পরিস্কার জানিয়ে দিচ্ছেন ফেরিওয়ালা।

জামাই ষষ্ঠী মিটতে না মিটতে এ ভাবে ’জামাই বিক্রি’ হওয়ার বিষয়টি জেনে সবার অবাক হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে হ্যাঁ,ঘটনা সত্য ।পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের ’বুড়ো শিবের’ গাজনে প্রতিবছর এভাবেই হয়ে থাকে জামাই বিক্রির রঙ্গ তামাসা।আর তিনেই তিন দিন ধরে তা নিরেই উন্মাদনায় ভাসেন গ্রামের মানুষজন।

প্রায় চার শতাধীক বছরকাল ধরে খণ্ডঘোষের বোসপাড়া সংলগ্ন এলাকায় হয়ে আসছে বুড়ো শিবের গাজন।মূলত খণ্ডঘোষের রায়পাড়া,ভট্টাচার্য পাড়া ও বোসপাড়া মিলিয়ে তিন দিনের বুড়ো শিবের গাজন হয়।পুরোহিত রাজেশ ভট্টাচার্য্য ও উমাপদ ভট্টাচার্য জানান,“সাবেক রীতি মেনেই গাজন হয়ে আসছে । তবে লোকসভা নির্বাচনের জন্য এবার গাজনের তারিখ একটু পিছিয়ে দিতে হয়েছে।

গাজনে এলাকার ১০০ থেকে ১৫০ জন সন্ন্যাস গ্রহণের পর তাঁরা বুড়ো শিবের পূজোপাঠে অংশ নেয়। আর বুড়ো শিবের গাজনকে ঘিরে সন্ন্যাসরা বিভিন্ন ’সং’ সাজার মাধ্যমে বিভিন্ন চরিত্র ও কাহিনী তুলে ধরেন।সেখানে যেমন থাকে বর্তমান সময় কালের ঘটনবলি তেমনি প্রাধান্য পায় পৌরাণিক কাহিনী। ভ্যান গাড়িতে ’জামাই ফেরি’ তেমনই এক রঙ্গ তামাসার কাহিনী।

খণ্ডঘোষের বুড়ো শিবের গাজনে ’জামাই ফেরি’ এবার বেশ সাড়া ফেলেছে।জামাই ষষ্ঠী কাটতে না কাটতেই জামাই ফেরি।অর্থাৎ একেবারে সদ্য মার্কেটে আসা জামাই বাবাজীবন।এ নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করে অনেকে আবার বলছেন,এ যেন দুয়ারে বর বাবাজীবন। ফেরি ওয়ালার ভ্যান গাড়িতে চেপে থাকা জামাইদের নিয়ে মজা করে দরদাম করতেও দেখা গেল গ্রামবাসীদের।

See also  শক্তিগড়ে অস্বাস্থ্যকর ল্যাংচা বিক্রিতে লাগাম পড়াতে অভিযানের পরেই এফআইআর প্রশাসনের


দরদাম করার সময় জামাইয়ের গাল তোবড়া কিনা
,ফত্রিশ পাটি দাঁত আছে কিনা ,সে সব জিজ্ঞাসার উত্তরও খরিদ্দারকে দিতে হল ফেরিওয়ালাকে। সত্যি,এ যেন এক অভিনব ব্যবসায়ীক ভাবনা। এমন ব্যবস্যা বাস্তবে শুরু হলে ফেরিওয়ালারা হয়তো হাসবে ।কিন্তু ঘটকরা চোখে জল ধরে রাখতে পারবে না বলে গাজনে আসা ভক্তরা নিজেদের মধ্যে বলাকওয়া করলেন।

খণ্ডঘোষ নিবাসী পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ অপার্থিব ইসলাম বলেন,“বুড়ো শিবের গাজনে মানুষের ঢল নামে । গাজনে জামাই ফেরি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে অপার্থিব বাবু এক গাল হেসে বলেন,ওটা আনন্দ দেওয়ার জন্যে। ওইসব রঙ্গ তামাসা দেখে গাজন উৎসবে আসা মানুষজন একটু আনন্দ পায়,মজাও পায়।জামাই ফেরি গাজনের অন্যতম আকর্ষণও বটে । সবাই সেটা উপভোগও করেন।”

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি