আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

মহা সমারোহের সাথে কালনা ১ নম্বর ব্লকের ধাত্রীগ্রামে আনুমানিক ৩০০ বছরের ঐতিহ্যমন্ডিত জগদ্ধাত্রী পুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

আজথেকে বহু যুগ আগেকার কথা। একথা প্রাচীন এক জনপদ ধার্য গ্রামের কথা। এই গ্রামের পূর্ব দিক দিয়ে বয়ে চলেছে পতিত পাবনী ভাগীরথী। শোনা যায় একসময় রাজা বল্লাল সেনের আমলে এই গ্রাম থেকেই কর ধার্য বা আদায় করা হতো। তাই এই গ্রামের নাম ছিল ধার্যগ্রাম। এই গ্রামে সকল জাতির বাস ছিল। সেই সময় রামভদ্র তর্কসিদ্ধান্ত নামে এক ব্রাহ্মণ পণ্ডিত এই গ্রামে বসবাস শুরু করেন।

কথিত আছে একদিন তারই পুত্রবধূ বাড়ির সামনের পুকুর থেকে স্নান সেরে জল আনার সময় পুকুরের জলে শাঁখা পলা চুরি পরিহিতা দুটো হাত দেখতে পান। তিনি ভেবেছিলেন কোন সধবা নারী জলে ডুবে যাচ্ছে তাই বারবার সাহায্যের জন্য হাত দেখাচ্ছেন। আর্তের সাহায্য করার জন্য তিনি জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু কোন মানুষ তিনি দেখতে পাননি। খুঁজে না পেয়ে তিনি কলসিতে জল ভরতে যান ।তখন তিনি আশ্চর্য এক দৃশ্য দেখতে পান।

তিনি কলসির দ্বারা সৃষ্ট ঢেউয়ের সঙ্গে যে তরঙ্গ উঠছে সেখানে সোনার দুর্গা প্রতিমার অবয়ব তিনি লক্ষ্য করলেন। তখন পুকুরের পাড়ে বসে বসে সেই কলসির উপর মাথায় দেওয়া তেল সিঁদুর দিয়ে জলে ফুটে ওঠা মায়ের মূর্তি এঁকে ফেলেন। সেই রাতেই তর্ক সিদ্ধান্ত কে মা স্বপ্নাদেশ দেন। বলেন আমি মা জগদ্ধাত্রী। তার পুকুরেই তিনি আছেন। তিনি বলেন তার পুত্রবধূ যে রূপটি এঁকেছেন সেই রূপেই মায়ের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো করার কথা বলেন।।

কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে দেবী তার পুজো করার কথা বলেন । মায়ের আদেশ মতোই এই স্থানটির নাম ধার্যগ্রাম থেকে হয় ধাত্রীগ্রাম। এই গ্রামের বাসিন্দা নিতাই চন্দ্র সেন বলেন আনুমানিক ৩০০ বছর আগে এই পুজো শুরু হয়েছিল। সেই থেকে আজও সকল রীতিনীতি মেনে কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে ধাত্রীগ্রামের অধিষ্ঠাত্রী দেবী জগদ্ধাত্রী মায়ের পুজো হয়। এখানে মায়ের ভোগে মাছ দেওয়ার রীতি প্রচলিত আছে। মাকে মাছের টক এবং মাছের ঝাল রান্না করে নিবেদন করা হয়। এখানে এখনো বলি প্রথা বর্তমান। মানত পুরণে এখানে এখনো ছাগ বলি হয়।

See also  মুখোশ তৈরি করে স্বনির্ভর হচ্ছে সুন্দরবনের ছাত্র ছাএীরা

এছাড়াও ধুনো পোড়ানো ,দন্ডি কাটা সহ মায়ের পূজা অর্চনা মহা ধুমধাম এর সাথে হয়। আজকের দিনে কয়েক হাজার পুন্যার্থী মায়ের কাছে পুজো দিতে আসেন। শুধু ধাত্রীগ্রামই নয় দূর দূরান্ত থেকেও ভক্তরা আজকের দিনে মায়ের কাছে আসেন পুজো দিতে। এখানে ষষ্ঠী সপ্তমী অষ্টমী এবং নবমী এই চার দিনের পুজো একদিনেই হয়। পুজো উপলক্ষে আজ এখানে অন্নক্ষেত্র র আয়োজন করা হয়। সেখানে হাজার হাজার মানুষের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি