আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

আর্থিক দুর্নীতি অভিযোগে সিউড়ি পৌরসভায় তদন্ত, প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সিউড়ি পৌরসভায় তদন্ত শুরু হতেই তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আবারও প্রকাশ্যে এসেছে। রাজ্যের পৌর ও নগর উন্নয়ন দপ্তরের ডিরেক্টরেট অফ লোকাল বডিজ (DLB) এই তদন্ত শুরু করেছে, যা পৌরসভার দীর্ঘদিনের চাপা অসন্তোষকে উসকে দিয়েছে।


দুর্নীতির অভিযোগ এবং তদন্তের সূত্রপাত

বীরভূম জেলার সদর শহর সিউড়ি পৌরসভার বিরুদ্ধে জল, রাস্তা, বিদ্যুৎ সহ একাধিক বিভাগে আর্থিক দুর্নীতি, তহবিল তছরূপ এবং বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, DLB-এর কাছে একটি অভিযোগপত্র জমা পড়েছে, যাতে ছয় বা সাতজন তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বাক্ষর রয়েছে। এই অভিযোগ পেয়েই গত ১১ জুলাই শুক্রবার দুপুরে দুইজন তদন্তকারী পৌরসভায় হানা দেন এবং তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করেন। এই অভিযোগপত্রেই আর্থিক অনিয়মের লম্বা ফিরিস্তি দেওয়া হয়েছে।


পৌরপ্রধান বনাম বিধায়ক: প্রকাশ্যে কোন্দল

তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই পৌরসভার পৌরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় এবং সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরি-এর মধ্যেকার পুরনো কোন্দল নতুন করে সামনে এসেছে। ১২ জুলাই শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে পৌরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় সরাসরি বিধায়ককে নিশানা করে বলেন, “বিধায়কের চামচারা ভূয়ো অভিযোগ করেছে।” তিনি আরও দাবি করেন যে, “বিধায়ক শহরের কোনো উন্নয়ন করেন না” এবং অভিযোগের কোনো সারবত্তা নেই। এ বিষয়ে প্রমাণসহ লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।

পৌরপ্রধানের এই মন্তব্যের পাল্টা দিয়েছেন বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরি। তিনি বলেছেন, “আমি আমার বিধানসভা এলাকার কোণায় কোণায় নজর রাখি।” তিনি আরও যোগ করেন, “উপরের দিকে থুতু ফেললে তা নিজের গায়ে পড়ে তাই আমি এমন কাজ করি না।” বিধায়ক ইঙ্গিত দিয়েছেন, “কে কে বিজেপির সাথে রাখছে জানি। ঠিক সময়ে সব বলব।


দীর্ঘদিনের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রতিফলন

সিউড়ি পৌরসভার এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন নয়। গত পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্ব নেওয়া তৃণমূল কাউন্সিলর অঞ্জন করও তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চাপে মাঝপথেই পৌরপ্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। শহরের অনেকেই জানেন যে, এই পৌরসভার দুর্নীতি ‘গগনচুম্বী’ এবং দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে স্বয়ং উপ-পৌরপ্রধানও তার প্রাপ্য ‘সম্মান’ পান না। নতুন করে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু হওয়ায় পৌরসভার উপর ‘কর্তৃত্ব’ বজায় রাখার তাগিদে পৌরপ্রধান বনাম বিধায়কের এই দ্বন্দ্ব আরও স্পষ্ট হয়েছে।

See also  পুলিশ দিবসে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে চালু করা হল ‘সন্মান’ প্রকল্প

এই তদন্তের ফলাফল কী হয় এবং তৃণমূলের এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি