জীবন যখন হঠাৎ থমকে যায়, যখন একের পর এক আঘাতে সবকিছু অন্ধকার হয়ে আসে—ঠিক তখনই কিছু মানুষ ঈশ্বরের মতো পাশে এসে দাঁড়ান। কাইতি গ্রামের সিং পরিবারের জীবনে তেমনই এক আলোর নাম আজ মানবতা।
সর্পদংশনে তাপস সিংয়ের আকস্মিক মৃত্যু যেন সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয়। স্বামীহারা রানু সিং, দু’টি ছোট শিশু—চারদিকে শুধু অসহায়তার দীর্ঘশ্বাস। তার মধ্যেই রানু সিংয়ের শারীরিক অসুস্থতা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তোলে। ঠিক সেই সময় রায়না ২ ব্লকের চারচক্রের শিক্ষকরা নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আর দায়িত্ববোধ নিয়ে এসে দাঁড়ান এই পরিবারের দরজায়। রেশন, শীতবস্ত্র, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী—সবকিছুর সঙ্গে তাঁরা নিয়ে আসেন ভরসা, সাহস আর বাঁচার শক্তি।
কিন্তু মানবতার গল্প এখানেই থেমে থাকেনি।
এই খবর সামনে আসতেই বরোজপোতা গ্রামের যুবক সেখ এলতাফ আলম যেন মানবিকতার এক নতুন অধ্যায় লিখে দিলেন। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী তিনি তুলে দিলেন কয়েক মাসের রেশন সামগ্রী, নগদ অর্থ—আর সবচেয়ে বড় কথা, দুই শিশুর ভবিষ্যতের দায়িত্ব। আজ থেকে যতদিন ওই দুই কন্যাসন্তান পড়াশোনা করবে, তাদের সমস্ত শিক্ষার খরচ বহনের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলেন এলতাফ। নিঃস্বার্থ এই প্রতিশ্রুতি শুধু সাহায্য নয়, এটা এক পিতৃস্নেহের ছায়া।
রানু সিংয়ের চোখে আজ আর শুধু কান্না নেই—আছে কৃতজ্ঞতা, আছে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন। অসহায়তার মাঝেও ফিরে এসেছে বিশ্বাস—এই সমাজ এখনও ভালো মানুষে ভরা।
কৃষক সেতু নিউজ বাংলার পক্ষ থেকে সেখ এলতাফ আলমকে জানাই হৃদয়ের গভীর থেকে অসংখ্য শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
এমন মানুষরাই সমাজের আসল শক্তি, মানবতার প্রকৃত মুখ।
আজ আবার প্রমাণ হল—
মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য।








