আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

নবান্নের নির্দেশ কে থোড়াই কেয়ার-ভিআইপি জাহির করতে নীল বাতি লাগানো গাড়িতে চেপেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিডিও’রা

By krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

লাল-নীল বাতির গাড়ির অপব্যবহার নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের মতই ক্ষোভ ব্যক্ত করেছিল বঙ্গের হাইকোর্ট।তারপরেই বেআইনি ভাবে গাড়িতে লাল-নীল বাতির ব্যবহার রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। লাল-নীল বাতির গাড়ি কারা কারা ব্যবহার করতে পারবে তা নির্দিষ্ট করে দেয় নবান্ন।সেই মত রাজ্য পরিবহন দফতর নির্দেশিকা জারি করে।সেই নির্দেশিকায় রাজ্যের কোনও বিডিও’কে ফ্ল্যাশার সহ বা ছাড়া নীল বাতি লাগানো গাড়িতে চেপে ঘোরার অধিকার দেওয়া হয় নি।তা সত্ত্বেও নিজেকে ’ভিআইপি’ হিসাবে জাহির করতে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর সহ একাধীক ব্লকের বিডিও দিব্যি নীল বাতি লাগানো গাড়িতে চেপেই সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন।সেটা দেখেও পুলিশ ও পরিবহন দফতর নিশ্চুপ থাকায় লাল বা নীল বাতির গাড়ির অপব্যবহার বন্ধে প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

লাল-‌নীল বাতির গাড়ি ব্যবহার করে প্রতারণা চক্র ফেঁদে বসেছিল প্রতারকেরা।তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট ক্ষোভ প্রকাশ করতেই নবান্ন নড়ে চড়ে বসে।কারা কারা লাল-নীল বাতির গাড়ি ব্যবহারের অধিকারী হবেন তা তিন বছর আগেই নবান্ন নির্দিষ্ট করে দেয়।নবান্নের নির্দিষ্ট করে দেওয়া তালিকায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্য মন্ত্রীসভার মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা তো রয়েইছেন।এছাড়াও রয়েছেন,’মুখ্য সচিব,অতিরিক্ত মুখ্য সচিব,প্রধান সচিব, ডিভিশনাল কমিশনার,রাজ্য পুলিশ ও দমকল বিভাগের ডি.জি,আয়কর ও শুল্ক দফতরের কমিশনার,পুলিশের আই.জি এবং ডি.আই.জি’।রাজ্য স্তরের এই সকল উচ্চপদস্থ আধিকারিক গণের পাশাপাশি প্রতিটি জেলার জেলাশাসক,পুলিশ সুপার এবং মিউনিসিপাল কমিশনাররাতালিকায় স্থান পেয়েছেন।তাঁরা নিজস্ব এলাকায় নীল বাতি লাগানো গাড়িতে চেপে ঘুরতে পারবেন।সর্বশেষ তালিকায় যাঁরা জায়গা পেয়েছেন তাঁরা হলেন,প্রশাসনের সাব ডিভিশনাল অফিসার(SDO) ও পুলিশের সাব ডিভিশনাল অফিসার (SDPO)।“

লাল-নীল বাতির গাড়ি ব্যবহার নিয়ে নবান্নের এই নির্দেশের বিষয়ে জামালপুর ব্লকের বিডিও পার্থসারথী দে সহ জেলার বাকি বিডিও’রা কিছুই জানেন না এমনটা নয়।তবুও নিজেকে ’ভিআইপি হিসাবে’ জাহির করতে এইসব বিডিও’রা সরকারী নির্দেশ কে অমান্য করেই চলেছেন। নীল বাতি লাগানো গাড়ি ছাড়া জামালপুর ব্লকের বিডিও তো কোথাও যাতায়াতই করেন না।তাঁর ওই গাড়িতে আবার ’হুটারও’ লাগানো আছে। রাজ্যের উচ্চ পদস্থ কোন আধিকারিক কিংবা জেলাশাসক বা মহকুমা শাসক ব্লকে কোনও প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে এলে তাঁদের সঙ্গে পাল্লা দিতে বিডিও পার্থসারথী দে নীল বাতি লাগানো গাড়িতে চেপেই পিছু পিছু যান।তখনও ’কালো কভার’ দিয়ে নীল বাতি ঢেকে রাখার কোন ধার তিনি ধারেন না।

See also  করোনা আক্রান্ত রোগীদের কাছ থেকে মোটা টাকা অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নেওয়া বন্ধে কড়া পদক্ষেপ নিল জামালপুর ব্লক প্রশাসন

পার্থসারথী দে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসের শেষের দিকে জামালপুর ব্লকের বিডিও পদে দায়িত্ব গ্রহন করেন।সেই থেকেই তাঁকে এমন ’ভিআইপি’ চালেই ঘোরা-ফেরা করতে দেখে আসছেন ব্লকের বাসিন্দারা।জেলার ভাতার,খণ্ডঘোষ,আউসগ্রাম ১ ও ২ ব্লক,রায়না ১ ও ২ ব্লক গলসি ২ ব্লক সহ আরো কয়েকটি ব্লকের বিডিও’র গাড়িতে নীল বাতি লাগানো রয়েছেে।অভিযোগ,এই সকল বিডিও’রাও নিজ নিজ এলাকায় ঘোরার সময় ওই নীল বাতি ’কালো কভারে’ ঢেকে রাখার কোন ধার ধারেন না । নীল বাতি ’প্রকাশ্য’ রেখেই তাঁরা ওই গাড়িতে চড়ে দেদার ঘুরে বেড়ান। তবে অবশ্য জেলায় অনেক বিডিও আছেন ,যাঁরা সরকারী নির্দেশিকাকে অমান্য করে ভিআইপি সাজতে চান নি।তাঁরা সরকারী নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে নীল বাতি বিহীন সাদামটা গাড়ি’ই ব্যবহার করেন।

জেলার যে সকল বিডিও নীল বাতি বিহীন গাড়িতে চেপে ঘোরাফেরা করেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন মেমারি ১ ব্লকের বিডিও শতরুপা দাস। নীল বাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার না করার কারণ নিয়ে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,“কে কি করছে তা আমি বলতে পারবো না।তবে বিডিও পদে থেকে আমি নীল বাতি লাগানো গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেড়ানোর অধিকারী নই। তাই আমি আমার গাড়িতে নীল বাতি লাগাই নি“।আর মেমারির পাশের জামালপুর ব্লকের বিডিও পার্থসারথী দে বলেন,“অনেক বিডিও’ই গাড়িতে নীল বাতি ব্যবহার করছেন,তাই আমিও করছি“।গাড়িতে নীল বাতি লাগিয়ে ঘোরার বিশেষ অনুমতি প্রশাসন থেকে আপনি কি পেয়েছেন ? এর উত্তরে পার্থসারথী দে বলেন,“ না না সেই রকম কিছু নেই।“

জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) আয়েষা রাণী এ এই ঘটনার কথা শুনে পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন, সরকারী নির্দেশিকা সবাইকেই মানতে হবে।নির্দিষ্ট পদাধীকারি না হলে কেউ নীল বাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন না।এমনটা কোন কোন বিডিও করছেন তার তদন্ত আমরা করবো“। জেলাশাসক এই কথা জানালেও জেলার পরিবহন আধিকারিক (RTO) গোবিন্দ নন্দি এই বাপারে ফোনে কোনও মন্তব্য করবেন না বলে এড়িয়ে যান।

See also  এক ঝলকে দেখে নিন পূর্ব বর্ধমানের আজকের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি