আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

তারকেশ্বর গাজন মেলার ইতিহাস

By krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

বিনা নিমন্ত্রণে স্বামী শিবের যঞ্জ ভাগ নিশ্চিত করতে দেবাদিদেবের অনুমতি আদায় করে সতী গিয়েছিলেন পিতার দক্ষের যঞ্জে।‌ যে যঞ্জে সকল দেবতার উপস্থিত ছিলেন একমাত্র দেবাদিদেব মহাদেব ব্যতীত, এই যঞ্জ যে দেবাদিদেব ব্যতীত সম্পূর্ণ হবে না তা বোঝাতেই পিতৃ গৃহে গিয়েছিলেন সতী। অন্যদিকে নিমন্ত্রণ ছাড়াই সতী সেখানে গিয়ে উপস্থিত হওয়ায় মহাদেবকে অপমানসূচক কথা বলা হয়। পতি নিন্দা শ্রবনের অপরাধে স্ব-ইচ্ছায় দেহ ত্যাগ করেন সতী আর প্রিয়তমা পত্নীর বিয়োগ কথা শুনে তাণ্ডব লীলা শুরু করেন মহাদেব। মহাদেবকে থামাতে তখন ভগবান নারায়ণ সতীর দেহকে ৫১ খণ্ডে খণ্ডিত করেন। সেই ৫১ টি টুকরো পরিণত হয় ৫১ সতী পীঠে। সতীকে হারিয়ে দেবাদিদেব এরপর কঠিন তপস্যায় বসেন। অপরদিকে তারকাসুর নামের এক অসুরের তাণ্ডবে সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড ত্রাহি চিৎকার করতে থাকে।

 

 

তারকাসুর দেবতাদেরকে তাড়িয়ে স্বর্গরাজ্য অধিকার করে বসলে দেবতারা সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার কাছে গিয়ে নিজেদের সমস্যার কথা বলেন। তখন ব্রহ্মা বলেন যে তারকাসুর অজেয়। কারণ সে বর প্রাপ্ত যে একমাত্র শিব অংশে জন্ম গ্রহণ করা পুত্রের হাতেই তার মৃত্যু হবে। অথচ দেবী সতীর দেহত্যাগের পর মহাদেব তপস্যায় মগ্ন তিনি আর দ্বিতীয় বিবাহ করেননি। যদিও দেবী সতীই হিমালয়ের রাজ গৃহে পার্বতী রূপে জন্মগ্রহণ করে মহাদেবকে স্বামী হিসেবে পাওয়ার জন্য তপস্যায় মগ্ন হয়েছেন কিন্তু যেখানে দেবাদিদেব মহাদেব নিজেই তপস্যা মগ্ন সেখানে তিনি কিভাবে পার্বতীর কথা জানতে পারবেন।

 

 

এই সময় সমগ্র সৃষ্টি ও ব্রহ্মাণ্ডকে বাঁচাতে ভক্তরা আসরে নামেন। ভক্তরা সন্ন্যাস নিতে শুরু করেন, তবে এতেও ভোলেবাবা ভোলেন না, তখন ভক্তরা পাহাড় থেকে ঝাঁপ দেবেন বলে ঠিক করেন – এই সময়ে ভক্তদের প্রতি কৃপা পরবশ হয়ে তপস্যারত পার্বতীকে বিয়ে করতে রাজি হন মহাদেব। এরপর চৈত্র মাসের শেষে শিব ও লীলাবতীর (পার্বতীর) বিবাহ হয় ও এই বিবাহর মধ্য দিয়ে শুভ শক্তির জাগরণ ও অশুভ শক্তির বিনাশ সূচিত হয় সেই সময় থেকেই সন্ন্যাস গ্রহণের প্রচলন শুরু হয়।

See also   ভিন ধর্মে বিয়ে করায় বৃদ্ধ মাকে একঘরে করেদিল গ্রামের মাতব্বররা - ধার্য করা হল মোটা অঙ্কের জরিমানা

 

 

অন্যান্য শৈব ক্ষেত্রের মত শিব তীর্থ তারকেশ্বরেও চৈত্র মাসে তাই ভিড় হয় দেখার মত। ১লা চৈত্র থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে শিব ভক্তরা বাবা তারকনাথের দর্শনের আশায় তারকেশ্বরে উপস্থিত হন। সেখানে দুধ পুকুর বা শিব গঙ্গায় স্নান করে তারা গলায় উত্তরীয় পরিধান করেন ও বাবার পুজো দিয়ে সন্ন্যাস গ্রহণ করে এক মাস সেই ব্রত পালন করেন। সেই উপলক্ষে পুরো চৈত্র মাস জুড়ে তারকেশ্বরে গাজন মেলা চলে।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি