পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের শিয়ালী গ্রাম, যেখানে দরিদ্র পরিবারগুলির জন্য জীবন কাটানোই প্রতিদিনের চ্যালেঞ্জ। দামোদর নদের বন্যায় গ্রামের চারটি মাটির বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এর ফলে, চার পরিবার বাধ্য হয়ে দামোদরের বাঁধে ত্রিপলের তাঁবুতে আশ্রয় নেয়। এই কঠিন পরিস্থিতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দুঃখগাথা
বন্যার জেরে শিয়ালীর আনন্দ রায়, বাসুদেব রায়, কনকলতা রায় এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা চরম সংকটে পড়েন।
- তাঁদের বাড়িগুলি ছিল মাটির দেয়ালে ছিটে বেড়ার তৈরি, যা বন্যার জলের তোড়ে ধ্বংস হয়ে যায়।
- প্রায় আড়াই মাস ধরে তাঁরা বাঁধের ত্রিপলের তাঁবুতে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হন।
- শীতের কারণে তাঁরা ভাঙা ঘরে ফিরে গেলেও, আবাস যোজনার পাকা বাড়ি না পাওয়ার হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন।
ত্রাণ ও সরকারি সহায়তার অভাব
বন্যার পরে জেলাশাসক আয়েশা রাণী তাঁদের গ্রামে গিয়ে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন।
তবে আবাস যোজনার ঘর বা স্থায়ী সাহায্য না মেলায় তাঁরা দীর্ঘদিন বাঁধে বসবাস করতে বাধ্য হন।
কনকলতা রায়ের প্রতিবন্ধী মেয়ে ও চার ছেলের পরিবারের মতো অনেকেই শীত ও দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
আশ্রয়ের অপেক্ষায় ভাঙা ঘর
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির বক্তব্যে উঠে এসেছে তাঁদের অসহায়তার চিত্র।
- আনন্দ রায়ের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত ঘরে থেকে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন।
- বাসুদেব রায়ের ছেলে প্রবীর পড়াশোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কারণ বাঁধের তাঁবুতে সুষ্ঠু পরিবেশের অভাব।
- বৃদ্ধা কালিন্দী সরেন ও কালিপদ মালিক, যাঁদের মাটির বাড়ি ঝড়-বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে, এখনো পাকা ঘরের অপেক্ষায় আছেন।
জেলাশাসকের আশ্বাস ও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ
জেলাশাসক আয়েশা রাণী জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি আবাস যোজনার ঘর পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
- ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির নাম ইতিমধ্যেই নথিভুক্ত করা হয়েছে।
- দ্রুত পাকা বাড়ি তৈরির টাকা অনুমোদিত হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
আবাস যোজনা: দরিদ্রদের নতুন স্বপ্ন
আবাস যোজনার পাকা বাড়ি পেয়ে শিয়ালীর দরিদ্র পরিবারগুলি আবার নিরাপদ জীবনে ফিরে আসতে পারে।
সরকারের এই উদ্যোগ দরিদ্র মানুষের জন্য এক নতুন আশার আলো হয়ে উঠবে।