আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

কল্যাণপুরে প্রথমবার দুর্গোৎসব – মায়ের আশীর্বাদে পূরণ হল গ্রামবাসীর বহু বছরের স্বপ্ন

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

বীরভূম জেলার কাঁখরতলা থানার অন্তর্গত কল্যাণপুর গ্রামে এ বছর প্রথমবার অনুষ্ঠিত হল মা দুর্গার পূজা। দীর্ঘদিন ধরে গ্রামবাসীর ইচ্ছে ছিল গ্রামের মাটিতে একত্রে দুর্গাপূজা করার, কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। অবশেষে মা দুর্গার আশীর্বাদে গঠিত হয় নতুন কমিটি— কল্যাণপুর সর্বজনীন দুর্গা উৎসব কমিটি। এই কমিটির উদ্যোগেই পূজার শুভ সূচনা হয় এবং গ্রামবাসীর বহু বছরের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পায়।

প্রতিমা নির্মাণ থেকে মহা উৎসবের প্রস্তুতি মহালয়ার দিন খুঁটি পূজোর মাধ্যমে শুরু হয় পূজার আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি। প্রতিমা গড়ার দায়িত্ব পড়ে মামুদপুর গ্রামের অভিজ্ঞ মৃৎশিল্পী পূর্ণচন্দ্র ঘোষের উপর। তার নিপুণ হাতের কারুকার্যে গড়া মনোমুগ্ধকর প্রতিমা গ্রামবাসীর হৃদয় জয় করে। মণ্ডপে সেই প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করে দেবী আরাধনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দুর্গোৎসব।

ষষ্ঠীর দিন মহাধুমধামে পূজোর উদ্বোধন হয়। উদ্বোধন করেন ব্লক সভাপতি কেদার ঘোষ মহাশয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা। গ্রামের প্রতিটি ঘর থেকে মানুষ এসে উপচে পড়া ভিড় জমায়, যা প্রমাণ করে এই প্রথমবারের পূজো গ্রামবাসীর মনে কতখানি আনন্দের সঞ্চার করেছে।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর আনন্দমুখর পরিবেশ সপ্তমী থেকে শুরু হয় নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নাটক, গান, নাচ সহ নানা আয়োজনকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় উৎসবের আবহ। শুধু গ্রামবাসী নন, দূরে বিয়ে হয়ে যাওয়া মেয়েরাও বাপের বাড়িতে ফিরে এসে এই আনন্দ-উৎসবে যোগ দেন। পুজোর দিনগুলোতে কল্যাণপুর গ্রাম পরিণত হয় মিলনমেলার আসরে।

দশমীতে পুরস্কার বিতরণ ও সম্বর্ধনা দশমীর দিনে আয়োজিত হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। পড়াশোনায় কৃতী ও প্রয়োজনশীল ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরস্কার। পাশাপাশি কমিটির পক্ষ থেকে থানার ওসি এবং গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে সম্বর্ধনা জানানো হয়। ঐক্যের উৎসবে উজ্জ্বল গ্রাম প্রথমবারের আয়োজনে গ্রামবাসীর উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। ভক্তি, আনন্দ আর ঐক্যের এক অনন্য ছবি ফুটে ওঠে গোটা গ্রামে। মায়ের আরাধনা থেকে সাংস্কৃতিক মিলন, পুরস্কার বিতরণ থেকে সম্বর্ধনা— সব মিলিয়ে কল্যাণপুর দুর্গোৎসব হয়ে ওঠে ঐতিহাসিক।

See also  তৃতীয় লিঙ্গ মানুষের পাশে দাঁড়ালেন উপপ্রধান সাহাবুদ্দিন মন্ডল

গ্রামবাসীর আশা, এ পূজা আগামী দিনে নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং আরও বৃহৎ আকারে রূপ নেবে। এ বছরের প্রথম পূজা শুধু একটি উৎসব নয়, বরং কল্যাণপুর গ্রামের মানুষের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় স্মৃতি হয়ে থাকবে।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি