পারিবারিক আর্থিক অবস্থা বাড়িতে প্রতিমা এনে পুজো করার মতো নয়। অন্তত দুর্গা পুজো করার মতো তো নয়ই। বংশ রক্ষার জন্য সন্তান কামনায় তবুও আনা হল দুর্গা প্রতিমা। 125 বছর আগে কাঞ্চননগরের তন্তুবায় পাড়ায় দুর্গাপুজোর চল শুরু হলো।
বাড়িতে তাঁত। সেই তাঁতে কাপড় বুনে বিক্রি করে সংসার চলে। তারই মধ্যে বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত কালীর পুজো চলে। পাঁচকড়ি মন্ডলের স্ত্রী সন্তান কামনায় কাতর মিনতি করলেন সেই দেবীর কাছে। মা কালী স্বপ্নাদেশ দিলেন, ছেলেপুলে নিয়েই আসবো। সে কথা না হয় থাক মিথ হয়েই।
স্ত্রীর কথায় কালীর বদলে দুর্গা পুজোর আয়োজন শুরু করলেন তাঁতী পাঁচকড়ি মন্ডল।
কিন্তু এতো খরচ জোগাবেন কোথা থেকে। শুরু হল বাড়ি বাড়ি ভিক্ষে করা। ভিক্ষের চাল জমা হল ঠাকুর ঘরে। সেই ভিক্ষের কড়ি একত্রিত করে কালীর মন্দিরে প্রতিষ্ঠা হল দুর্গার। আধুনিক মনন বলবে কাকতালীয়, তবে মন্ডল পরিবারকে তারপর থেকে আর বংশরক্ষার জন্য চিন্তা করতে হয়নি।
বর্তমানে পরিবারে তুলনামূলক স্বচ্ছলতা এসেছে। তবে ভিক্ষের প্রথা ফিরে এসেছে বারে বারে। অনেকেই মনোবাঞ্ছা পূরণে ভিক্ষের মানত করে। নিয়ম রক্ষার ভিক্ষে করে তা পূরণও করেন।
মহাষষ্ঠীতে পালকি করে কলাবউ আনা ও তা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে পুজোর শুরু। বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরের নির্ঘন্ট মেনে চলে পুজো। আত্মীয়স্বজনদের উপস্হিতি, পঙতিভোজ, আনন্দ উল্লাসে জমজমাট থাকে কাঞ্চননগরের মন্ডলবাড়ি।