বাবু সিদ্ধান্ত
প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে পূর্ব বর্ধমানে ।এবার করোনা থাবা বসালো জেলার জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ।এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক,নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মী সহ ৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তার জেরে তালা পড়লো জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ।কোন রকমে চালু রাখা হয়েছে জুরুরী বিভাগ। হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চুড়ান্ত বিপাকে পড়ে গিয়েছেন জামালপুর ব্লকের বাসিন্দারা ।জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা পরিষেবা চালু রাখার জন্য চিকিৎসক ,নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মী মিলিয়ে রয়েছেন ২০ জন।সপ্তাহ খানেক আগে জামালপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা ১২ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে । তার মধ্যে ছিলেন বন্ধ্যাত্বকরণের অস্ত্রপচার হওয়া তিন বধূ ।এরপরেই জামালপুর হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্স সহ ৮ জনকে আইসোলেশনে পাঠানো হয় ।এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে শুক্রবার রাতে জামালপুর ব্লকের ৩৯ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে ।
সেই রিপোর্টে জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ১ চিকিৎসক ,৩ নার্স ,১ জন স্বাস্থ্য কর্মী(এনএম) ও ২ জন গ্রুপ ডি স্টাফের নাম রয়েছে । এছাড়াও জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অধীন চকদিঘী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মুখ্য চিকিৎসক ও ১ জন ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টেরও করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে । একদিনে একসঙ্গে এতজন চিকিৎসক নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসার পরেই হাসপাতালের কর্মী মহলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে । এখন হাসপাতালে পরিষেবা চালু রাখার জন্য রয়েছেন একজন মাত্র চিকিৎসক ও হাতেগোনা কয়েকজন নার্স । শনিবার সকাল থেকে তারা অভিযোগ তোলেন পরিষেবা চালু রাখার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে পিপিই কিট ,গ্লাভস,ও স্যানিটাইজার নেই । তাই ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা সম্ভব নয় ।ভয়ে ও আতঙ্কে তারা শনিবার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে অস্বীকার করেন। ফলে এদিন জরুরী বিভাগ ছাড়া হাসপাতালের বাকি সব বিভাগের গেটে তালা পড়ে যায় ।এমনিতেই জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতিদিন রুগীর চাপ যথেষ্ট থাকে ।
জামালপুরে ১৩ টি পঞ্চায়েত এলাকার মানুষজন ছাড়াও পাশের রায়না ব্লকের মুগরা অঞ্চলের মানুষজনও এই হাসপাতালেই চিকিৎসা করাতে আসেন । হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে ,প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০০ রোগী হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসার জন্য আসেন । এছাড়াও জরুরী বিভাগে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জনের চিকিৎসা হয়।করোনার থাবায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আউটডোর পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন মহা বিপাকে পড়ে গিয়ে জামালপুরের বাসিন্দারা ।পরিষেবা পাবার জন্য তাদের এখন ভরসা ২৫ কিমি দূরের মেমারি হাসপাতাল ,১৪ কিমি দূরের রায়না হাসপাতাল ও প্রায় ৪৫ কিমি দূরের বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ।জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ )প্রণব রায় জানিয়েছেন ,‘চিকিৎসক , নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মী মিলিয়ে ৯ জন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় জামালপুর হাসপাতালে আউটডোর পরিষেবা আপাতত বন্ধ রয়েছে ।