কাকদ্বীপ: ছয় মাস আগে থেকেই ২০২৪ এর গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি শুরু করে দিলো জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কাকদ্বীপের মহকুমা শাসকের অফিসে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি নিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে হলো প্রথম দফার বৈঠক। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। উপস্থিত ছিলেন কাকদ্বীপের মহাকুমার শাসক অরন্য বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট। ২০২৪ এর গঙ্গাসাগর মেলার কে কেন্দ্র করে এদিনের প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলাশাসক।
বৈঠকে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার ও পুণ্যার্থীদের যাতায়াত ব্যবস্থার উপর বেশি জোর দেয়া হয় এদিনের এই বৈঠকে মূলত কাকদ্বীপ রেল স্টেশন ও লর্ড নম্বর ৮ ভেসেল ঘাট ও নামখানা স্টেশন ও নারায়নপুর থেকে গঙ্গাসাগরে বেনুবন পর্যন্ত যাতে পুণ্যার্থীদের জন্য ২৪ ঘন্টা ভেসেল পরিষেবা স্বাভাবিক করার দিকেও বেশি জোর দেয়া হয় এদিনের এই বৈঠকে।পুজোর আগেই শুরু হচ্ছে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি। ২০২৪ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে সাগরদ্বীপে শুরু হবে গঙ্গাসাগর মেলা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তীর্থযাত্রীরা ওই সময় পূণ্যস্নানের জন্য সমবেত হন সাগরে। নতুন বছরের ১৫ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তির দিন সাগরতটে পূণ্যস্নান করবেন তীর্থযাত্রীরা। কিন্তু সেই মেলার জন্য এখনও অনেকটা সময় হাতে থাকলেও এখন থেকেই প্রস্তুতির কাজ শুরু করে দিতে চায় দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতরগুলি। প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, রাজ্য জুড়ে উৎসবের মরসুম শুরু হচ্ছে অক্টোবর মাসের শেষ মাঝামাঝি সময়ে।
শারদোৎসব শেষ হতে হতে অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহ হয়ে যাবে। আবার দিপাবলি উৎসব-সহ কালীপুজো ও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চলা উৎসব শেষ হতে হতে এ বছর নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ হয়ে যাবে। তাতেই ব্যস্ত থাকবে রাজ্য প্রশাসন। সে কারণে গঙ্গাসাগর মেলার মতো বড় আয়োজনের জন্য বিশেষ সময় পাওয়া যাবে না। তাই অগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই মেলা আয়োজনের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ২০২৪ এর গঙ্গাসাগর মেলাতে রেকর্ড সংখ্যক পু নাতিদের ভিড় হতে পারে এমনটাই মনে করছে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গঙ্গাসাগর মেলার সময় পূর্ণ্যার্থীরা এসে সাগরবেলাভূমিতে ভিড় করে।
কয়েক দিনের জন্যই গঙ্গাসাগর সমুদ্র সৈকত হয়ে ওঠে মিনি ভারতবর্ষ। গঙ্গাসাগর দ্বীপ বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হওয়ার কারণে উন্নতিদের অন্যতম যাতায়াতের মাধ্যমে হল ভেসেল কিংবা লঞ্চ পরিষেবা। বেশ কয়েক মাস ধরে মুড়িগঙ্গা নদীর নাব্রতা কমে যাচ্ছে এর ফলে বেশ কিছু সময় ধরে ভেসেল পরিষেবা বন্ধ রাখতে হচ্ছে পরিবহন দপ্তরকে। গঙ্গাসাগর মেলার সময় এইরকম বাধার যাতে না সম্মুখীন না হতে হয়, সেই জন্যই আগামী ২৯ শে অক্টোবর থেকেই মুড়িগঙ্গা নদীতে ডেসিং এর কাজ শুরু করবে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর। এ বিষয়ে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা তিনি বলেন, ২০২৪ এর গঙ্গাসাগর মেলা কে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে প্রথম দফার বৈঠক আজ হলো।
গঙ্গাসাগর মেলাতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে প্রশাসনকে যে সকল বাধার সম্মুখীন হতে হয় সে সকল বাঁধা গুলির প্রসঙ্গে আজকের আলোচনা করা হলো। গঙ্গাসাগরের কপিলমুনি মন্দিরের সামনে নদী ভাঙ্গন রোধ করার জন্য রাজ্যের সেচ দপ্তর ব্যবস্থা নিচ্ছে। কিভাবে কপিলমুনি মন্দিরকে রক্ষা করা যায়। গঙ্গাসাগর মেলার সময় পূর্ণ্যার্থীদের যাতায়াতের অসুবিধা যাতে না হয় সেজন্য দুটি স্থায়ী জেটিঘাটের নির্মাণ করা হবে।এই বৈঠকের পর দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলা শাসক সুমিত গুপ্তা তিনি জানান, ২০২৪ এর গঙ্গাসাগর মেলার কথা মাথায় রেখে আজ প্রশাসনের বিভিন্ন আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। মূলত এই বৈঠকে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা ও যাত্রী পারাপারের উপর বেশি জোর দেয়া হয়। সুষ্ঠুভাবে মেলা পরিচালনার করার ক্ষেত্রে আগামী দিনেও বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা বৈঠক হবে।