কৃষকসেতু,উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,কুলতলি :
কুলতলিতে স্ত্রীর উপর নির্যাতনের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার বধূর দেহ।আর এই ঘটনায় উওেজনা ছড়ালো এলাকায়।বহু দিন ধরে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ চলছিল বলে দাবি করেছে মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন।কুলতলি তে এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো এলাকায়। মৃতার নাম মানোয়ারা মোল্লা(২০)।

পণের দাবিতে তাঁর উপর অত্যাচার করা হত বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, স্বামী মাঝিদুল মণ্ডল এক মহিলার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত ছিলো বলেও অভিযোগ। তাই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ চলছিল বলেও দাবি করেছে মৃতার বাপেরবাড়ির লোকজন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর থানা এলাকায় মানোয়ারা মোল্লার বাড়ি। তাঁর শ্বশুরবাড়ি কুলতলি থানা এলাকায়। বছর দেড়েক আগে মানোয়ার ও মাঝিদুলের সঙ্গে ফোনে আলাপ হয়। কয়েক মাস কথাবার্তায় দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। বছর দেড়েক আগে বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে মানোয়ারার বাড়িতে চলে যান মাঝিদুল। সেখানেই দু’জনের বিয়ে হয়।
মেয়ের ইচ্ছা থাকায় মানোয়ারার পরিবারের লোকজন আর ওই বিয়েতে কোনো আপত্তি করেননি বলে খবর। কিছুদিন সেখানেই থাকার পর স্ত্রীকে নিয়ে নিজের বাড়িতে ফিরেছিলেন মাঝিদুল।অভিযোগ,শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পর থেকেই মানোয়ারার উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু হয় বলে অভিযোগ। বিয়ের সময় পণের টাকা,সোনার গয়না সবই মানোয়ারার বাপেরবাড়ির তরফ থেকে দেওয়া হয় বলে খবর। তারপরও আরও টাকা বাপেরবাড়ি থেকে নিয়ে আসার জন্য মানোয়ারাকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন চাপ দিতো বলে অভিযোগ।
মৃতার বাপেরবাড়ির তরফে অভিযোগ, মাঝিদুলের এক মহিলার সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। সেই কথা জানার পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ ও চলছিল বলে খবর। প্রতিবাদ করলে মানোয়ারার উপর চলতো শারীরিক নির্যাতন।এমনকি এক সময় বাপেরবাড়ির লোকজনদের মানোয়ারার সঙ্গে যোগাযোগ পর্যন্ত করতে দেওয়া হত না বলে অভিযোগ। বুধবার মানোয়ারার বাপেরবাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। তার আগে এদিন শ্বশুরবাড়িতে মানোয়ারাকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলতে দেখা যায় বলে খবর।
শ্বশুরবাড়ির লোকজন মৃতার বাপেরবাড়িতে ফোন মারফত খবর দেওয়া হয় , মানোয়ারা ‘আত্মঘাতী’ হয়েছেন। যদিও সেই কথা মানতে চায়নি বাপেরবাড়ির লোকজন। মানোয়ারাকে ‘খুন’ করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। মৃতার পরিবারের দাবি,সোমবার বিকাল পর্যন্ত ফোনে মানোয়ারার সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁর ব্যবহারে কোথাও কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি। জানা গিয়েছে, মাঝিদুল ও তাঁর বাবা ভিনরাজ্যে কাজের জন্য রয়েছেন।ওই বাড়িতে শাশুড়ি, দেওর ও ননদ রয়েছে। তারাই ‘খুন’ করেছেন বলে অভিযোগ।
মঙ্গলবার রাতে
কুলতলি থানায় মৃতার বাপের বাড়ির তরফে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।তারপরে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে বুধবার ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।তবে এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।তবে এলাকায় উওেজনা রয়েছে এই ঘটনায়।