রাজ্য সরকারের সংস্থা তন্তুজ পাশে দাড়ানোয় লক ডাউনে মুখে হাসি ফুটেছে পোষাক তৈরির কারিগরদের ।তবে তন্তুজের বরাত অনুযায়ী পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার পোষাক তৈরির কারিগররা কোন সাধারণ পোষাক তৈরি করছেন না ।তাঁরা এখন শুধুমাত্র বাংলার করোনা যোদ্ধাদের জন্য বিশেষ পোষাক তৈরি করছেন । যার পোষাকি নাম ‘পিপিই কিট ’। পাশা পাশি করোনা সংক্রমন থেকে রক্ষা পাবার মাস্কও তারা তৈরি করছেন।
করোনা সংক্রমণ মোকাবিলার কাজে পিপিই কিটের গুরুত্ব অপরিসীম ।তেমনই প্রয়োজন মাস্কের । সেই কিট ও মাস্কের যোগান দিতে শয়ে শয়ে দর্জি দিন রাত এক করে এখন কাটোয়ার পোষাক কারখানায় বসে কাজ করে চলেছেন ।তাঁদের তৈরি ৫০ হাজার কিট ইতিমধ্যেই তন্তুজকে সরবরাহ করা হয়ে গিয়েছে । এখনও আরো বহু কিট তারা যোগান দেবে । পাল্লা দিয়ে চলছে মাস্ক তৈরির কাজও।আর এই পিপিই কিট ও মাস্ক তৈরির কাজ করেই এই কঠিন সময়ে আর্থিক সমস্যা অনেকটাই লাঘব হয়েছে কাটোয়ার দর্জিদের। । কাটোয়া শহরেরই বসবাস করেন দর্জি জয় ভৌমিক ও সুকুমার দত্ত ।
বুধবার তারা জানালেন, “লকডাউন চলায় তাঁরা দোকান খুলতে পারননি । ফলে তাঁদের পোষাক তৈরির কাজ বন্ধ হয়েযায় । দোকান বন্ধ রাখতে হওয়ায় রোজগারও বন্ধ হয়ে যায় । সংসার কিভাবে চালাবেন তা ভেবে উঠতে পারছিলেন না । কিন্তু এখন সেই দুঃশ্চিন্তা কেটেছে । পিপিই কিট ও মাস্ক তৈরি করার কাজ পেয়েছি। তাত জন্যই রোজগার পথ খুলে গেছে । লকডাউন চললেও সংসার চালাতে সমস্যা হচ্ছে না ।”
কাটোয়া পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে একটি পোষাক তৈরির কারখানা। তার কর্ণধার দীপা আগরওয়াল জানান ,‘তাঁর গারমেন্টস ফ্যাক্টরিতে মূলত খাদি ও হ্যান্ডলুমের চুড়িদার, স্কার্ট ফ্রক ইত্যাদি তৈরি হয় ।শারদোৎসব কিংবা ইদের আগে আগে পোষাক তৈরির কাজের চাপ বহুগুন বেড়ে যায় । কিন্তু এবছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে সবকিছুরই উলট পালট ঘটে গেছে ।
লক ডাউন চালু হবার পর তাঁদের গারমেন্টস ফ্যাক্টরিতেও থমকে যায় পোষাক তৈরির কাজ । দর্জিরা সকলেই কর্মহীন হয়ে পড়েন । এই অবস্থার মধ্যে তন্তজ সংস্থা মাধ্যমে পিপিই কিট ও মাস্ক তৈরির বরাত মেলায় কিছুটা হলেও দর্জিদের মুখে হাসি ফুটাতে পেরেছেন। এখন চুড়িদার , স্কার্ট ফ্রক তৈরির ভাবনা একেবাবে ছেড়ে দিয়ে দিন রাত এক করে ফ্যাকটরিতে শুধুই চলছে পিপিই কিট ও মাস্ক তৈরির কাজ ।
দীপা আগরওয়াল বলেন , তাঁদের শতাধীক দর্জি মিলে প্রতিদিন তৈরি করছে প্রায় ২০০০ কিট । ইতিমধ্যে ৫০ হাজার কিট তন্তুজকে সরবরাহ করে দিয়েছেন । তন্তুজ থেকে ৫০ হাজার পিস মাস্ক তৈরিরও বরাত মিলেছে । সেই মাস্কও এখন জোর কদমে তৈরি হচ্ছে । ’এই বিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন ,“করোনা মোকাবিলায় রাজ্যে পিপিই কিট ও মাস্কের চাহিদা যথেষ্ট বেড়েছে । সেই চাহিদা পূরণের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে” ।