নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব বর্ধমান:-২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম নেই। নেই এসআইআর–এর জন্য প্রয়োজনীয় নথিও। নাগরিকত্ব প্রমাণে হিয়ারিংয়ে ডাকা হতে পারে—সেখানে কীভাবে নিজেদের পরিচয় প্রমাণ করবেন, এই দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া–২ ব্লকের অগ্রদ্বীপ গ্রামের ১৮৪ নম্বর বুথের ২৫টি পরিবারের।
জানা গিয়েছে, ওই পরিবারগুলি দীর্ঘদিন ধরেই কাটোয়া এলাকায় বসবাস করছেন। তাঁদের পূর্বপুরুষরাও এখানকারই বাসিন্দা ছিলেন। তবে বারবার ভাঙন ও বন্যার ফলে তাঁদের বাড়ি, ভিটে ও জমির সমস্ত পুরনো নথিপত্র নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মূলত ভাগীরথী নদীর তীরে বসবাসকারী এই পরিবারগুলি ২০০০ সালের ভয়াবহ বন্যায় ঘরবাড়ি ও জমি হারান। সেই সময় বন্যার জলে ভেসে যায় জমির দলিল, ব্যাঙ্কের পুরনো পাশবইসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি।
বর্তমানে কেউ খাস জমিতে, কেউ রাস্তার ধারে, আবার কেউ জমি কিনে ঘর তুলে বসবাস করছেন তাঁরা। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম নেই তাঁদের কারও। তবে বছরখানেক আগে আধার কার্ড ও ভোটার কার্ড তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকজনের। কারও কারও রয়েছে জব কার্ড। কিন্তু পুরনো জমির দলিল, হাতে লেখা ব্যাঙ্কের পাশবই—এ ধরনের কোনও প্রাচীন নথিই আর হাতে নেই।
এদিকে, এই ২৫টি পরিবার ইতিমধ্যেই এনুমারেশন ফর্ম পেয়ে তা পূরণ করে সংশ্লিষ্ট বিএলও–র কাছে জমা দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও উদ্বেগ কাটছে না তাঁদের। দীপালি ঘোষ, উত্তরা ঘোষ, জওহরলাল বাগ, ভাদুরি বাগ, কনকলতা দাস, সুচিত্রা সর্দার, কৃষ্ণধন বাগরা-সহ একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় এবং প্রয়োজনীয় নথির অভাবে ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তাঁরা। পুরনো কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় কি না, সেই চেষ্টায় তাঁরা স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিস থেকে শুরু করে বিভিন্ন দফতরে ছুটে বেড়াচ্ছেন।
এই প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা কৃষ্ণধন বাগ বলেন,
“পরিবারগুলি বন্যায় সবকিছু হারিয়েছে। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম নেই, প্রয়োজনীয় নথিও নেই। স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা চিন্তায় রয়েছেন। আমরা তাঁদের পাশে আছি”।
নাগরিকত্ব সংক্রান্ত এই অনিশ্চয়তায় অগ্রদ্বীপের ২৫টি পরিবারের ভবিষ্যৎ এখন প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে।








