শক্তি চট্টোপাধ্যায়, বাঁকুড়া

গত ৩রা সেপ্টেম্বর ছিল কিংবদন্তি চারণকবি বৈদ্যনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৯৪তম জন্মদিন। ১৯৩২ সালের এই দিনে বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং চারণকবি হিসেবে তাঁর অবদান বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসে অনন্য।
বাঁকুড়ার পাশাপাশি সমগ্র রাজ্যে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হয় কবির জন্মদিন। বাঁকুড়া শহরে মূল অনুষ্ঠান হয় স্কুলডাঙ্গার জেলা ক্রীড়া ও শক্তি সংঘের হলঘরে, আয়োজক ছিল শহরের সামাজিক সংগঠন ‘ধূলামাটি’। অনুষ্ঠানে বহু গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ছাত্রছাত্রী উপস্থিত থেকে কবির প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।

অনুষ্ঠানে ছিল কবির স্মৃতিচারণ, স্বরচিত কবিতা পাঠ ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ‘ধূলামাটি’র আনন্দ পাঠশালার প্রশিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীরা নৃত্যানুষ্ঠানে অংশ নেন। সংগঠনের সম্পাদক প্রশান্ত চৌধুরী জানান—
“প্রবাদপ্রতিম চারণকবি বৈদ্যনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন পালনের মূল উদ্দেশ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তাঁর সাহিত্য, প্রতিবাদী চরিত্র ও সৃষ্টিকে পৌঁছে দেওয়া।”
কবির উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘রুদ্রনাচন’, ‘খাদ্য দে’, ‘আমকাঁঠালের ভোজ’, ‘মৃণাল হৃদয়’, ‘জবাব চাই’ প্রভৃতি। নাটক ‘রঙের গোলাম’ ছিল এক সময়ের জনপ্রিয় নাট্যকৃতি। এছাড়াও তিনি শিশুদের চলচ্চিত্র ‘নীলকমল লালকমল’-এ ‘গল্পদাদু’ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
স্বাধীনতার পর লাল আলখাল্লা, পায়ে ঘুঙুর আর সাদা দাড়ি–চুল নিয়ে রাজ্যের সর্বত্র ঘুরে ঘুরে প্রতিবাদী কবিতা শোনানোই ছিল তাঁর চিরচেনা ভঙ্গি। নিজের লেখা পুস্তিকা ও বই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি।
এই স্মরণসভা সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট শিক্ষক মনোজ ভট্টাচার্য।