স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রতি দিয়ে ক্যানসার আক্রান্ত বৃদ্ধের কাছথেকে ৪ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হল স্বাস্থ্য দপ্তরের এক ঠিকা কর্মী । ধৃতের নাম অর্ণব মণ্ডল। বর্ধমান শহরের ভাতছালার পিওনপাড়ায় তার বাড়ি। সে রায়না ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড তৈরির দায়িত্বে রয়েছে।ক্যানসার আক্রান্ত বৃদ্ধ গৌরচন্দ্র দাসের অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে রায়না থানার পুলিশ রায়না বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।পুলিশের দাবি ধৃত যুবক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা কবুল করেছে।এছাড়াও ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে এই প্রতারনার ঘটনায় আরো একজন জড়িত রয়েছে । সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ মঙ্গলবার ধৃতকে পেশ করে বর্ধমান আদালতে।বৃদ্ধর কাছথেকে হাতিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধার এবং প্রতারণা চক্রের অপর সদস্যের হদিশ পেতে ধৃতকে ৭ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। সিজেএম রতন কুমার গুপ্তা ধৃতকে ৪ দিন পুলিশ হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন । পুলিশ জানিয়েছে , প্রতারিত বৃদ্ধ গৌরচন্দ্র দাস অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক । তাঁর বাড়ি রায়না থানার মিল্কিডাঙায় । তাঁর স্ত্রীরও কিডনির সমস্যায় ভুগছেন ।নিয়মিত তাঁকে ডায়ালিসিস নিতে হয়। গৌরচন্দ্র বাবু পুলিশকে জানিয়েছেন ,পেনশনের টাকায় দু’জনের চিকিৎসার খরচ জোগাতে তাঁকে হিমশিম খেতে হয় ।
সেই জন্যই তিনি স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করার পরিকল্পনা করেন। কিছুদিন আগে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করানোর জন্য তিনি রায়না ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে খোঁজখবর নিতে যান । সেখানে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের দায়িত্বে থাকা অর্ণব মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়।ওই অর্ণব-ই তাঁকে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রথমে বলে ৫ হাজার টাকা খরচ হবে ।সরল মনে সেই কথা বিশ্বাস করেন গৌরচন্দ্র বাবু। চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করার জন্য তিনি অর্ণবকে চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র ও ৩ হাজার টাকা দেন ।গৌর বাবু বলেন , স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করেদেবার জন্য লাগবে বলে জানিয়ে এরপর থেকে বেশ কয়েক দফায় অর্ণব তাঁর কাছথেকে টাকা নিতে থাকে ।
“সম্প্রতি গৌরবাবুর মোবাইলে একটি ফোন আসে। ফোন করে এক ব্যক্তি দাবি করেন তিনি নবান্ন থেকে বলছেন ।ওই ব্যক্তি তাঁকে বলেন টাকা দিয়ে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করানোর জন্য শাস্তি পেতে হবে। তাঁকে জেলে জেতে হবে । গৌর বাবু বলেন ,এমনকি পেনশনও বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে ওই ব্যক্তি হুমকি দেন। নবান্ন থেকে ফোন করছি বলে দাবি করা ওই ব্যক্তি একই সঙ্গে বলেন ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দিলে তবেই পেনশন বন্ধ করা হবেনা”।ক্যানসার আক্রান্ত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বলেন ,এই সব কথা শুনে ভয়ে তিনি সেই টাকাও অর্ণবকে দিয়ে দেন। এরপর অর্ণব তাঁকে তাঁর স্ত্রীর কার্ড করার আশ্বাস দেয়। সে স্ত্রীর চিকিৎসার নথিপত্র নেয় তাঁর কাছ থেকে।। গৌরচন্দ্র বাবু অভিযোগে বলেন,এই ভাবে বেশ কয়েক দফায় অর্ণব তাঁর কাছ থেকে মোট ৪ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা আদায় করে । কিন্তু এতটাকা নেবার পরেও তাঁদের স্বামী কিংবা স্ত্রী কারুরই স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড হয়নি।গৌরচন্দ্র বাবু বলেন , প্রতাড়িত হয়েছেন বুঝতে পারার পর সবিস্তার উল্লেখ করে সোমবার তিনি রায়না থানায় অর্ণবের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন । পুলিশ দ্রত ব্যবস্থা নিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে ।