আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

ল্যাংচা-মিহিদানার শহর হিসাবে প্রসিদ্ধ বর্ধমানে ৪ জুন শুধুই বিক্রি হল ঘাস ফুল ছাপ সন্দেশ

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ৪ জুন

মিষ্টি ছাড়া পুজো পার্বণ বা উৎসবের কথা ভাবতেই পারেনা বাঙালি।সেই জন্যেই শারদোৎসব বা দেওয়ালি আসলেই বেড়ে যায় মিষ্টির কদর।তখন চরমে ওঠে মিষ্টান্ন কারিগরদের ব্যস্ততা।তবে এখন দেওয়ালি বা শারদোৎসব না থাকলেও রয়েছে গণতন্ত্রের সর্বশ্রেষ্ঠ ’ভোট’ উৎসব।মঙ্গলে হয় সেই ’উৎসবের মহরণ’।এ দিনটাতেও যে মিষ্টির কদর বাড়বে তা অবশ্য ল্যাংচা- মিহাদানার শহর হিসাবে প্রসিদ্ধ বর্ধমানের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের বুঝতে অসুবিধা হয়নি।তাই শহর বর্ধমানের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা তৈরি করে ফেলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতীক মার্কা মিষ্টি।তবে এদিন কয়েক রাউণ্ড ভোট ঘোষণা হতেই বাজিমাত করে ফেলে “ঘাস ফুল“ ছাপ মিষ্টি । যার যোগান দিতে হিমসিম খেতে হয় মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের।

সাত দফার লোকসভা ভোট দু’দিন আগেই সমাপ্ত হয়েছে।ভোটের ফল কি হয় তা নিয়েই এখন উত্তেজনায় ফুঁষছে বাংলা সহ গোটা দেশ । বাংলার ৪২ টি লোকসভা আসনে এবার মূল লড়াইটা হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি-র মধ্যে। এই দুই রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা ছাড়াও কংগ্রেস,
,সিপিএম ও আইএসএফ এর প্রার্থীরা ভোটে লড়েছেন।একমাস ধরে ভোটের প্রচার ,মিটিং , মিছিল ঘিরে সরগরম ছিল গোটা বাংলা। তার সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভারি বুটের শব্দ। সেসব মিটে যাওয়ার পর আজ ভোটের গণনা । গণনা শেষে হবে ফল প্রকাশ।তার পর কোথাও
উড়বে সবুজ আবির ,কোথাও গেরুয়া আবির । উড়তে পারে লাল আবিরও। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলবে মিষ্টি মুখ করানো।কোন প্রার্থী খাওয়াবেন তৃণমূলের “জোড়া ফুল“ ছাপ মিষ্টি আবার অন্য কোন প্রার্থী “পদ্ম ফুল“ ছাপ মিষ্টি খাওয়াবেন ।
এর সঙ্গে সবুজ ও গেরুয়া রঙের রসগোল্লার চাহিদাও যে থাকবে ,তেমনটা ধরে নিয়ে বর্ধমানের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা সব ধরণের মিষ্টি তৈরি করে ফেলেন। যা দেখে মুগ্ধ হন ক্রেতারাও ।

শহর বর্ধমানের একটি অভিজাত মিষ্টির দোকানে
সোমবার রাতে গিয়ে দেখাগেল চুড়ান্ত ব্যস্ততা ।
কারিগররা যেন দম ফেলার সময় পাচ্ছেন না ।
গ্যাসের উনানে বড় বড় কড়াইয়ের কোনটাতে রসগোল্লা আবার কোনটাতে সন্দেশ তৈরি হচ্ছে। কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল ভোট রাজনীতির দিকে তাকিয়েই ওই মিষ্টির দোকানে
বিভিন্ন ধরণের মিষ্টি তৈরি হচ্ছে।কারিগররা বলেন,“আমাদের মালিক মাথা খাটিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতীক ছাপ মার্কা ভোট স্পেশাল হরেক ধরনের মিষ্টি তৈরির সিদ্ধান্ত নেন।খরিদ্দারের নজর কাড়তে আমরারও উৎসাহের সাথে মালিকের সঙ্গে সঙ্গত দিয়ে সেই মিষ্টি তৈরি করি। তবে মঙ্গলবার দুপুর গড়াতে শুধু ঘাস ফুল ছাপ মিষ্টি ও সবুজ রসগোল্লার জোগান দিতে আমাদের হিমসিম খেতে হয়“।

See also  দল প্রার্থী করলেও নানা আইনি গেরোয় ভোটে লড়া থমকে যতে বসেছে পূর্ব বর্ধমানের ডান বাম সব দলেরই একাংশ প্রার্থীদের

মিষ্টির দোকানের মালিক সৌমেন দাস বলেন,আমি বিভিন্ন উৎসব, পুজো পার্বণ এমনকি দেশ কোন ক্ষেত্রে বিশেষ সাফল্য পেয়ে থাকলে তা নিয়ে মিষ্টি তৈরি করে থাকি । কেননা ক্রেতারা এমন মিষ্টি পছন্দ করেন। তাই ভোট উৎসবকে সামনে রেখে অভিনব মিষ্টান্ন তৈরির ভাবনা আমার মনে জাগে। যেহেতু ভোট উৎসব ,তাই মিষ্টান্ন তৈরিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতীক ও তাদের পছন্দের রঙের মাহাত্মের প্রকাশ ঘটাতে হয় মিষ্টান্নে ।সেই মত জোড়া ফুল,পদ্ম ফুল ও কাস্তে হাতুড়ি প্রতীক সম্বলিত ছাঁচ জোগাড় করতে হয়।কড়া পাকের ছানার সন্দেশ ও ক্ষীরের সন্দেশ ওই সব ছাঁচে ফেল তুলে নেওয়া হয়। তারপর স্বাস্থ্য সন্মত বিভিন রঙের আঁকিবুকি দ্বারা স্পষ্ট ভাবে ওই সন্দেশে রাজনৈতিক দলের প্রতীক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ।একই ভাবে ’খেলা হবে’ লেখা ছাঁচে ফেলেও তৈরি হয়েছে মিষ্টি।

সেসব মিটি সোমবার সন্ধ্যায় দোকানের শোকেশে সাজানো হতেই বিক্রি শুরু হয়ে যায়।বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থকরা তাঁদের পছন্দের দলের প্রতীক সম্বলিত মিষ্টি কিনে নিয়েও যান। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর থেকে চাহিদা বেড়ে যায় শুধু ঘাস ফুল ও খেলা হবে ছাপ সন্দেশ আর সবুজ রসগোল্লার । বাকি অন্য রাজনৈতিক দলের প্রতীক ছাপ মিষ্টির চাহিদা একেবার শেয়ার বাজারের মত ধসে পড়ে বলে সৌমেন বাবু জানিয়েছেন“।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি