প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ১ নভেম্বর: একই রোগী।অথচ তাঁরই স্নায়ুরোগের ইইজি(EEG) রিপোর্ট দুই ডায়াগনস্টিক সেন্টার দিল দুই রকম । এমন ঘটনা নিয়ে এখন কাঠগোড়ায় বর্ধমানের দুই নামী ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ এনে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার দুটির বিরুদ্ধে জেলাশাসক ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে রোগীর পরিবার । জেলাশাসকের নির্দেশে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সেই অভিযোগের তদন্তে নামতেই অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ।জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের তদন্তে এখন নজর গোটা জেলার চিকিৎসা মহলের।
কালনার রসুলপুর গ্রামে বসবাস করেন মহম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন। প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরে তিনি তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন,“তাঁর ভাইঝি সোহানা ইয়াসমিন (২৩) দীর্ঘদিন ধরে স্নায়ুরোগে ভুগছেন। কলকাতার মল্লিকবাজারের একটি স্নায়ু বিশেষজ্ঞ হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকের পরামর্শে বর্ধমানের খোসবাগানের রামকৃষ্ণ রোডের এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রথম তাঁর ভাইঝির ইইজি(EEG) করা হয়।
সেই রিপোর্টে ‘স্বাভাবিক’ ফল আসে।ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসা চললেও তাঁর ভাইঝির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়না। পরবর্তীতে চিকিৎসকের নির্দেশে তিনি বর্ধমানে খোসবাগানের আর বি ঘোষ রোডের অন্য একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তাঁর ভাইজির ইইজি করান। আশ্চর্যজনকভাবে সেখানেও রিপোর্ট আসে ‘স্বাভাবিক’। কিন্তু কলকাতার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রিপোর্ট দেখে জানান, এটি ‘ভুয়ো’ এবং এই রিপোর্টের কোনও চিকিৎসাগত মূল্য নেই। তাঁদের অভিযোগ, “রেখাচিত্র বা গ্রাফ না দেখে ইচ্ছেমতো রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।” রোগীর পরিবারের দাবি,’ভুল রিপোর্টের কারণে চিকিৎসাতেও ভুল হয়েছে।”
মোয়াজ্জেম হোসেনের দাবি অনুযায়ী, “প্রথম রিপোর্ট তৈরি হয়েছিল ২৫ ফেব্রুয়ারি, দ্বিতীয় রিপোর্ট ১৬ অক্টোবর। পরে দুই ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই যোগাযোগ করি। রামকৃষ্ণ রোডের সেন্টার বিনামূল্যে নতুন রিপোর্ট দেওয়ার আশ্বাস দেয়, তবে আমরা আগ্রহ দেখাইনি। কিন্তু আর বি ঘোষ রোডের সেন্টারের দুই কর্মী আমার বাড়িতে এসে একই তারিখের নতুন রিপোর্ট হাতে দেন, যেখানে ‘অস্বাভাবিক’ লেখা। পুরনো গ্রাফ ব্যবহার করেই নতুন রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।”
এই ঘটনা নিয়ে জেলাশাসক আয়েষা রানি এ বলেন, “আমি সিএমওএইচকে সরেজমিন পরিদর্শন করে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছি“।ইতিমধ্যে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে জানা গেছে।যদিও আর বি ঘোষ রোডের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “রিপোর্ট চিকিৎসক গ্রাফ দেখে দেন, তাই বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”অভিযুক্ত চিকিৎসক অরুণ আগরওয়াল স্বীকার করেছেন, “ভুল হয়েছিল, পরে সেটা বুঝে সংশোধন করা হয়েছে।”








