বাবু সিদ্ধান্ত পূর্ব বর্ধমান ১৬ এপ্রিল- লক ডাউন ঘোষনা হতেই চরম বিপাকে পড়ে যান সুদূর পুরুলিয়ার গ্রাম থেকে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানা এলাকায় কাজ করতে আসা
পরিযায়ী শ্রমিকরা।শাক সিদ্ধ ,আলু পোড়া আর ফেন ভাত একবেলা খেয়েই দিন কাচ্ছিলেন ১৮জন পরিযায়ী শ্রশিক।এই খবর কৃষকসেতু বাংলা পোর্টালে প্রকাশ হতেই
নড়েচড়ে বসলো প্রশাসন।চাল, ডাল ,আলু সহ অন্য খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেওয়া হল মনিবের খামারে দিন কাটানো পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছে ।দু-বেলা পেট ভরানোর মত খাদ্য সামগ্রী মেলায় লক ডাউনের মধ্যে আপাতত স্বস্তিতে পুরলিয়ার পরিযায়ী শ্রমিকরা ।
অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের সকলের বাড়ি পুরুলিয়ার জেলার বড়ো থানার শিনটুনি গ্রামে। বরো ধান রোয়া ও আলু চাষের কাজ করার জন্য গত মাঘ মাসে ১৮ জনের পরিযায়ী শ্রমিক দল চলে আসেন জামালপুর থানা এলাকায়। শ্রমিকদের বেশিরভাগ জনই মহিলা।তাঁদের সঙ্গে রয়েছে দুটি শিশুও । পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে ১২ জন রয়েছেন আবুজহাটি ১ পঞ্চায়েতের বেজপুকুর পাড় এলাকায় । বাকি ৬ শ্রমিক রয়েছেন পাড়াতল ২ পঞ্চায়েতের বেজলা গ্রামে। নাদারুন কষ্টের মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা কয়েদিন যাবৎ গ্রামের মনিব প্রহ্লাদ হাঁসদা ও শেখ সিরাজের খামারেরই দিন কাটাচ্ছিলেন ।
কৃষকসেতু বাংলা কে পরিযায়ী শ্রমিক সরলা হাঁসদা ,শান্তিমনি মুর্মু জানিয়েছিলেন, ক্ষেত মজুরির কাজকরে কিছু অর্থ রোজগারের জন্য তারা গত মাঘ মাসে জামালপুরের মনিবের বাড়িতে আসেন।বরো ধান রোয়া ও আলু চাষের সব কাজ শেষ হয়ে যাবার পর তারা নিজেদের বাড়ি রওনা হবার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছিলেন ।তারই মধ্যে লকডাউন ঘোষনা হয়ে যেতেই তারা চরম বিপাকে পড়ে যান ।শান্তিমনি মুর্মু চোখের জল ফেলতে ফেলতে জানিয়েছিলেন ,ক্ষেত মজুরির কাজ করে যে কটা টাকা তারা রোজগার করেছিলেন তা লকডাউন শুরুর পরথেকে বসে বসে খেয়েই শেষ হয়ে যায় । তার পর থেকে খিদে মেটানোর জন্য অন্ন জোগাড় করাই তাদের কাছে দায় হয়ে ওঠে।
বাড়ি ফিরতে না পারায় পুরুলিয়ার বাড়িতে থাকা তাদের সন্তনরাও সেখানে সমস্যায় পড়েগিয়ে শুধুই কান্নাকাটি করে চলেছে । সরলা হাঁসদা সহ অন্য পরিযায়ী শ্রমিকরা জানিয়ে ছিলেন ,এমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েগিয়ে তারা কিছু খাদ্য সামগ্রী পাওয়া ও বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে দেবার আবেদন নিয়ে এখানকার স্থানীয় পঞ্চায়েতে দরবার করেছিলেন।কিন্তু পঞ্চায়েতের বাবুরা তাদের আবেদন গ্রাহ্য না করে ফিরিয়ে দেয় । মুখ ফিরিয়ে নেয় দুই মনিবও। খিদে মেটানোর জন্য শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে পুকুরপাড় থেকে তুলে আনা শাক সিদ্ধকরে ,আলুপোড়া আর সামান্য চাল দিয়ে ফেনে ভাত রান্নাকরে একবেলা খেয়েই দিন কাটাতে হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে শান্তিমনি জানালেন, ব্লকের বাবুরা তাদের চাল ,ডাল ও আলু দিয়েগেছে ।এখন কটা দিন দুবেলা পেট ভরা খাবার খেতে পারবেন ।
