প্রদীপ চট্টোপাধায় বর্ধমান

চতুর্থ দফার লোকসভা ভোটের আর তিন দিন বাকি রয়েছে। তার আগে বৃহস্পতিবার পুলিশের
বিরুদ্ধেই যেন বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ।তিনি এদিন বর্ধমান থানার আই-সি কে জুতিয়ে লম্বা করে দেওয়া ও রাস্তায় আই-সি’র কাপড় খুলে নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিলেন
। বিজেপি প্রার্থীর এমন হুঁশিয়ারি নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূল নেতৃত্ব
যদিও দিলীপ ঘোষের এই হুঁশিয়ারি কে পরাজয়ের
আগের পাগলামি বলে কটাক্ষ করেছে।
পুলিশের প্রতি দিলীপ ঘোষের ক্রুদ্ধ হওয়ার করাণ
বুধবার সন্ধ্যায় বর্ধমানের বীরহাটার ঘটনা। ওইদিন বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সেখানে রোড শো করতে গেলে পুলিশ রোড শো আটকে দেয়। তা নিয়ে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশ বচসা ও ধস্তাধস্তি হয়।এতে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জেলা পুলিশ সুপার আমন দীপ জানান,’অনুমতি ছাড়াই রোড শো হচ্ছিল। তাই পুলিশ আটকে দিয়েছে’। তবে পুলিশের বাধায় রোড শো করতে না পেরে দিলীপ ঘোষ চটে লাল হয়ে যান। যে ক্ষোভ এদিন তিনি বর্ধমানের বড়নীলপুর মোড় থেকে বটতলা প্রাতঃভ্রমণ সেরে জনসংযোগ করার সময় বর্ধমান থানার আই-সি সহ বিডিও এবং ডি এম কে নিশানা করে উগরো দেন।
দিলীপ ঘোষ এদিন বলেন,পুলিশ শুধু আমাদের প্রোগ্রাম ক্যানসেল করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাতদিন দশদিন বসে এটা করে গেছেন। ওদের কাছে লোক নেই। শুধু পুলিশ আছে। আমি এবারে বি ডি ও, ডি এম ঘেরাও করব। এর পরেই বর্ধমান থানার আই সি কে নিশানা করে দিলীপ ঘোষ
হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,“ওর বাপের জমিদারি নাকি? জুতিয়ে লম্বা করব ওকে।আই সি হয়েছে? কাপড় খুলে দেব রাস্তায় নিয়ে এসে৷ দিলীপ ঘোষ পাঁঁচ বছর এখানে থাকবে। ও (আই সি)ভেবেছে,এমন চামচাবাজি করে চলবে।কতবড় চামচা হয়েছে। আমি ওকে দেখছি।আই সি কে রাস্তায় ধরব।
যদি প্যান্ট না খুলে দিতে পারি, আমি দিলীপ ঘোষ নই। কাল ট্রেলার দেখেছে । ওর কোন মা-বাপ বাঁচাতে পারে দেখব।বালিচোর,গরুচোর নেতা ভেবেছে নাকি? এবারে ওকেই টার্গেট করব।
এমন হুঁশিয়ারি দিয়েই দিলীপ বিজেপি জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা কে নির্দেশ দেন, নাম দিয়ে আই সি এবং এক এস আই সুব্রত দেওয়ানের নামে অভিযোগ জানাতে।একই সঙ্গে তিনি বলেন, “এস আই নাকি খুব বড় হিরো? সে আমাদের ক্লাস নিচ্ছে। আর বালিওয়ালাদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। দু’মাস পরে আমি বর্ধমানে থাকব। মমতা থাকবে না।অভিষেক থাকবে না।দিলীপ ঘোষকে চেনে না।তোর কোন মা বাপ বাঁচায় আমি দেখব“।
জেলা সভাপতিকে ওই নির্দেশ দেওয়ার পরেই দিলীপ ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন,“আমার প্রচার হয়ে গেছে। আমি এবারে পুলিশ অফিসারের নাম দিয়ে কমপ্লেন করবো। দরকার হলে পুলিশকে থানায় আটকে রেখে দেব।থানা থেকে বেরতে দেব না“।
নির্বাচনের দায়িত্তে থাকা রাজ্য সরকারী কর্মচারী দের বিরুদ্ধেও এদিন বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন,“এখনো এ রাজ্যের সরকারি কিছু কর্মচারি টি এম সি-র হয়ে কাজ করছেন। ওরা আমার প্রোগ্রাম ক্যানসেল করছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলব। সেন্ট্রাল ফোর্সকে ঠিকমত ব্যবহার করা হচ্ছে না।”
দিলীপ ঘোষের এদিনের হুঁশিয়ারী প্রসঙ্গে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ’উনি নোংরা রাজনীতি করেন,নোংরা কথা বলতে পছন্দ করেন।আসলে পরাজয়ের ভয়ে পাগলামি করছেন। বর্ধমানের মানুষ এর জবার ইভিএমের
মাধ্যমে দিয়ে দেবেন’।