আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

ভোটের মুখে তৃণমূল কর্মীর আঙুল কামড়ে খেয়ে নেওয়ার অভিযোগ বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর বিরুদ্ধে-পঞ্চাায়েত সদস্যার শ্লীলতাহানী – গ্রেপ্তার দুই

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান

বাড়িতে ভোট চাইতে এসে পদ্ম শিবিরের লোকজন নাকি দিয়েছে কামড়!সেই কামড়ে আঙুল খুইয়ে কেঁদে ভাসালেন ঘাসফুল শিবিরের কর্মী।এমনই এক ঘটনায় বুধবার রাতে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের জৌগ্রামে।আঙুল খোয়ানো ঘাসফুল শিবিরের কর্মী বাবাই মিস্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগে ভিত্তিতে পুলিশ পদ্ম
শিবিরের পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী কার্তিক মির্ধাকে গ্রেপ্তার করেছে।তবে বাবাইও রেহাই পায়নি।পদ্ম শিবিরও পঞ্চায়েত সদস্যাকে মারধোর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে পুলিশ বাবইকেও গ্রেপ্তার করেছে।দু’জনকেই বৃহস্পতিবার পেশ করা হর বর্ধমান আদালতে ।বাকি অভিযুক্তদেরও খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। অশান্তি যাতে আর না বাড়ে সে ব্যাপারেও পুলিশ সজাগ রয়েছে।

চতুর্থ দফায় অর্থাৎ আগামী ১৩ মো হবে বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনের নির্বাচন।জামালপুর বিধানসভা এই লোকসভার অন্তর্গত।ভোটের দিন এগিয়ে আসার সাথে সাথে বিজেপি ও তৃণমূল, উভয় রাজনৈতিচ দলই এই বিধানসভা এলাকায়
প্রচার জোরদার করেছে।জামালপুরের জৌগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও তার কোন ব্যতিক্রম ঘটে নি ।এই পঞ্চায়েতে তৃণমূলের ১৯জন সদস্য থাকলেও বিজেপির তিন জন এবং সিপিএমের দু’জন নির্বাচিত সদস্য রয়েছে।তার মধ্যে জৌগ্রামের বাদপুর এলাকাতেই বিজেপির দু’জন পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছে।পাসের দোগাছিয়া এলাকার সদস্যও বিজেপির।এমত অবস্থায় লোকসভা ভোটের প্রচারে তাই বাদপুর এলাকার বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলে সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিতে নেমে পড়েছে। সেই প্রচারকে কেন্দ্র করেই বুধবার বাদপুরে ঘটে অশান্তির ঘটনা । যার রেশ ওই দিন রাতে জামালপুর থানার সামনেও আছড়ে পড়ে ।

হাতের আঙুল খোয়ানো তৃণমূল কর্মী বাবাই মিস্ত্রীর বাড়ি বাদপুর গ্রামে।জামালপুর গ্রামীণ হাসপাতালে
চিকিৎসা করিয়ে বুধবার রাতে তিনি জামালপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । তাঁর অভিযোগ ,বুধবার বিকাল সাড়ে চারটে নাগাদ
তাঁদের গ্রামের বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যা জবা মির্ধা ও তাঁর স্বামী কার্তিক মির্ধা,বিজেপির বেশ কয়েকজন কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁদের বাড়িতে ভোট চাইতে আসে। আমার বাড়ির দেওয়ালে তৃণমূল কংগ্রেসের একটি পোস্টার লাগানো রয়েছে দেখে তারা চটে গিয়ে উশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা শুরু করে । বাবাইয়ের বক্তব্য ,গালিগালাজ করা নিয়ে তিনি সহ তাঁর পরিবারের সকল মহিলা
ও পুরুষ সদস্যরা প্রতিবাদ করা শুরু করেন।সেটা মেনে নিতে না পেরে তঁকে কার্তিক মির্ধা ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েই তাঁর ডান হাতের অনামিকা আঙুলে কামড় বসিয়ে দেয়।আঘুলের একাংশ কামড়ে খেয়ে নেয় । এমনকি তাঁকে প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকিও ভোট চাইতে আসা বিজেপির ওই সকল লোকজন দিয়েছে বলে বাবাই মিস্ত্রীর অভিযোগ।

See also  বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান খণ্ডঘোষে

যদিও তৃণমূল কর্মী বাবাই মিস্ত্রীর অভিযোগের
সম্পূর্ণ উল্টো কথা পুলিশকে জানিয়েছেন বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী কার্তিক মির্ধা। লিখিত অভিযোগে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন,’বিজেপির হয়ে ভোটের প্রচারের জন্যো তিনি ও তাঁর স্ত্রী জবা দলের কয়েকজনকে নিয়ে বুধবার বিকাল সাড়ো পাঁচটা নাগাদ বাদপুরের হরিমন্দির সংলগ্ন এলাকায় যান। ওই সময় পরকল্পনা মাফিক এলাকার তূণমূলের কর্মীরা রড়,বাঁশ,শাবল প্রভৃতি নিয়ে তাদের উপর চড়াও হয় ।অশ্রাব্য গালাগালাজ করতে থাকে।কার্তিকের অভিযোগ তিনি ওই সময় প্রতিবাদ করলে বাদপুরের তৃণমূল কর্মী বাবাই মিস্তী ও তার দলবল তাঁকে রাস্তায় ফেলে মারতে শুরু করে । তা দেখে তাঁর স্ত্রী জবা মির্ধা ছাড়াতে গেলে তার উপরও চড়াও হয় বাবাই মিস্ত্রী ও তাঁর দলবল। তারা জবার শ্লীলতাহানিও করে। তাঁদের প্রাণে মেরে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেয় । পাড়া প্রতিবেশীরা এসে তাঁদের উদ্ধার করেন বলে কার্তিক মির্ধা পুলিশকে জানিয়েছেন।যদিও সংবাদ মাধ্যমের কাছে কার্তিক মির্ধা নিজেই স্বীকার করেছেন দলের অন্যদের সঙ্গে নিয়ে তিনি বাবাই মিস্ত্রীর বাড়িতে ভোট চাইতে গিয়েছিলেন। তাহলে
সেখানে বাবাই মিস্ত্রীর আঙুল কামড়ে খেল কে?
এই প্রশ্নের উত্তরে কার্তিক মির্ধার সাফাই, ধাক্কা ধাক্কির সময় দরজার কোনে আঙুল লেগে গিয়ে
হয়তো অমনটা হতে পারে । তিনি বাবাইয়ের আঙুল কামড়ে খেয়ে নিয়েছেন বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটা মিথ্যা বলে কার্তিক মির্ধা দাবি করেছেন ।

জামালপুরের তৃণমূল বিধায়ক অলোক মাঝি জানিয়েছেন,“বাংলার ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবে হোক এটা বিজেপি চায়না । জৌগ্রামের বাদপুরের ঘটনা তার বড় প্রমাণ । ভোট চাইতে যাওয়ার নাম করে
বাদপুরেড় তৃণমূল কর্মী বাবাই মিস্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করে বাইয়ের হাতের আঙুল কমড়ে খেয়ে নিয়েছে বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী। এইসব অপকর্মের জবার ভামালপুরের মানুষ ইভিএমে দেবে বলে অলক মাঝি মন্তব্য করেছেন । “ বিধায়কের দাবিকে নস্যৎ করে দিয়ে
জামালপুর নিবাসী জেলা বিজেপি নেতা রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী বলেন, “ভোটের সময় সারা বাংলা জুড়ে
হিংসার বাতাবরণ তৈরি করেছে তৃণমূল । বিজেপি কর্মীরা ভোটে প্রচারে বের হলেই তাদের তৃণমূল কর্মীদের হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে । বিজেপির মহিলা পঞ্চায়েত সদস্যরাও সেই হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। তার বড় প্রমাণ জৌগ্রামের বাদপুরের ঘটনা । “

See also  শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডনিয়ে হইচইয়ের মাঝেই আর্থিক দুর্নীতির অভযোগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের - চাঞ্চল্য রায়নায়

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি