বাঁকুড়া জেলার কোতুলপুর থানার মেরে পাড়া গ্রামের সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসে গোটা রাজ্যের স্বাস্থ্যপরিসেবায় একটি উজ্জ্বল নাম হয়ে উঠেছেন সৈয়দ আশরাফ হোসেন। প্রথম জীবনে একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও আজ তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ১১০ বেডের আধুনিক “মেডিকেয়ার জেনারেল হসপিটাল”। এখান থেকে ইতিমধ্যেই ৩০ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পেয়েছেন, যার একটি বড় অংশ স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের মাধ্যমে। ছোটবেলা থেকেই স্বাস্থ্যপরিসেবার সঙ্গে গভীর সম্পর্ক ছিল আশরাফ হোসেনের। তার বাবা সৈয়দ গোলাম হোসেন ছিলেন একজন গ্রামীণ চিকিৎসক। সেই পরিবেশ থেকেই স্বাস্থ্যসেবার প্রতি ভালোবাসা জন্মায়। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানে দেড়শোরও বেশি কর্মী কাজ করছেন, যার মধ্যে প্রায় শতাধিক স্পেশালিস্ট চিকিৎসক রয়েছেন। এই হাসপাতালে রয়েছে আধুনিক সিটি স্ক্যান, এমআরআই, ডায়ালিসিস, ক্যাথল্যাব, স্পাইন সার্জারি, কেমোথেরাপি, জেনারেল সার্জারি, গাইনি, অর্থোপেডিক্স ও শিশু বিভাগসহ প্রায় সব ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা।
তবে আশরাফ হোসেন শুধুমাত্র একটি বেসরকারি স্বাস্থ্যপ্রতিষ্ঠান পরিচালনাই করেন না—তিনি একজন নিবেদিত সমাজসেবী। বন্যা ত্রাণ, বৃক্ষরোপণ, রক্তদান শিবির, বস্ত্র বিতরণ, মন্দির-মসজিদ সংস্কার, খেলাধুলার পৃষ্ঠপোষকতা—সমাজের প্রায় প্রতিটি সেবামূলক কাজে তিনি সরাসরি যুক্ত। তার কাছে এসে সহায়তা না পেয়ে ফিরে গেছেন এমন একজন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি যে তৃপ্তি পান, সেটাই তার জীবনের মূল প্রেরণা। তার পরবর্তী লক্ষ্য—একটি পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার ও কার্ডিওলজি ইউনিট তৈরি করা, যাতে মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষ আরও উন্নত পরিষেবা পেতে পারেন। সম্প্রতি নিউজ ১৮ বাংলার পক্ষ থেকে তাকে সম্মানিত করা হয়েছে। পাশাপাশি, কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন উপলক্ষে বর্ধমানের জান ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকেও তাকে “ভারত গৌরব” সম্মানে ভূষিত করা হয়। অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকতে না পারলেও ডিডিএন বাংলার কর্ণধার বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম ও প্রখ্যাত চিকিৎসক ডাঃ অভিজিৎ দে তার হাসপাতালে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা তুলে দেন।

সম্মান পেয়ে সৈয়দ আশরাফ হোসেন বলেন, “এই স্বীকৃতি আমার আগামী দিনের কাজের অনুপ্রেরণা। আমি চাই সমাজের আরও বেশি মানুষের পাশে দাঁড়াতে, তাদের চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে।” তাঁর মতে, স্বাস্থ্যসেবা শুধু একটি পেশা নয়—এটি একটি সামাজিক দায়িত্ব।আজও তার প্রতিষ্ঠানে তিনি ২৪ ঘণ্টা উপস্থিত থাকেন, গরিব-ধনী সকলের সুখ-দুঃখের অংশীদার হন। সৈয়দ আশরাফ হোসেন যেন আধুনিক সময়ের সেই মানুষ, যিনি মানবসেবাকে জীবনের মূলমন্ত্র করে তুলেছেন।