ফের জমি আন্দোলন বঙ্গে।জমির ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাওয়ার দাবি নিয়ে জমি মালিকদের আন্দোলনে বুধবার উত্তাল হল পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের বোঁয়াইচণ্ডী এলাকা। জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে পথে নামা জমি মালিকদের আন্দোলনে থমকে গেল এন এইচ ১১৬ এ-র নির্মাণকাজ। ন্যায্য ক্ষতিপূরণ না। জমির ন্যায্য ক্ষতিপূরণ না মেলা পর্যন্ত কোন নির্মান কাজ করতে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেবার পাশাপাশি জমি মালিকার এদিন সীমানা পিলারও উপরে দিলেন। খড়গপুর থেকে মোরগ্রাম পর্যন্ত নতুন জাতীয় সড়ক (এন এইচ ১১৬ এ) নির্মিত হচ্ছে। এই রাস্তা পাঁচটি জেলার উপর দিয়ে যাচ্ছে। এই রাস্তা হয়ে তৈরি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ আরো সহজ হবে।এই রাস্তা তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহনের মূল্য নির্ধারণ নিয়ে তৈরি হয়েছে সমস্যা। জমির ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে খণ্ডঘোষের চাষি ও জমি মালিকরা মিলে ‘কৃষক ঐক্য মঞ্চ’ গঠন করেছেন। ব্যানারে ও হাতে লেখা নানা পোস্টার নিয়ে তারা এদিন সংগঠিত ভাবে পথে নামেন ।জমি মালিক ও কৃষকেরা দাবি তোলেন, জমি অধিগ্রহণ করতে হলে তাঁদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

খণ্ডঘোষ নিবাসী জেলার কৃষক নেতা বিনোদ ঘোষ জানান, চাষীরা উন্নয়নের বিরোধী নন। তাঁরা শুধু নায্য ক্ষতিপূরণ চান। কৃষকেরা বলছেন, “১৯৫৬ সালের আইনে ক্ষতিপূরণ দেবার কথা বলা হচ্ছে। অথচ ২০১৩ সালের অধিগ্রহণ আইনের সংশোধনী অনুসারেই তারা নায্য ক্ষতিপূরণ চান। সে দাবি না মানলে কাজ চলতে দেওয়া হবে না”। কৃষক ঐক্য মঞ্চের আহ্বায়ক শেখ শাহজাহান জানান,“চাষীদের চাপ দিয়ে জেলা প্রশাসন ভুল নীতি প্রয়োগ করছে। গতকাল খণ্ডঘোষের উখরিদ থেকে কাজে বাঁধা দেওয়া শুরু হয়েছে।সটা ঘোষণা করেই করা হয়েছে। এরপর তারা আদালতে যাবেন।’ বুধবার আন্দোলনের সূচনা হিসেবে কৃষকেরা এলাকায় বসানো জমি অধিগ্রহণের পিলারগুলি
উপড়ে ফেলেন।তাঁদের অভিযোগ,“এই অঞ্চলের জমি ’কাটা’ প্রতি ৯ লক্ষ ২৫ হাজার টাকায় বেচা-কেনা হলেও, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বিঘা প্রতি মাত্র ৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করেছে। বাজারদরের তুলনায় এই মূল্য অত্যন্ত কম বলে আন্দোলনকারীদের দাবি। তাঁরা আরও অভিযোগ করেন,“জেলাশাসক একতরফাভাবে নোটিশ জারি করে কৃষকদের অন্ধকারে রেখে কাজ শুরু করেছেন। বহুবার প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে দরবার করেও প্রতিকার না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা আন্দোলনের পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি করেন। আন্দোলনকারীরা এদিন পরিস্কার জানিয়ে দেন,“যদি জমির ন্যায্য ক্ষতিপূরণ মূল্য নির্ধারণ করা না হয় তবে তাঁরা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন। প্রয়োজনে তাঁরা আন্দোলন আরো তীব্র করবেন।
