আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের আগেই তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা ও তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে কমিশনে গুরুতর অভিযোগ বিজেপির

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

বাংলায় ‘এসআইআর’ (SIR) প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে ভোটার তালিকা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। দীর্ঘ এক মাস ধরে এনুমারেশন ফর্ম পূরণ ও জমা দেওয়ার পর্ব শেষ হয়েছে। এবার প্রকাশের অপেক্ষায় খসড়া ভোটার তালিকা। ঠিক এই আবহেই পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যা ও তাঁর মাকে ঘিরে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে সরব হল বিজেপি নেতৃত্ব।

২৬২ নম্বর জামালপুর (তপঃ) বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত জামালপুর–১ পঞ্চায়েত এলাকার উত্তর মোহনপুর গ্রামে এই বিতর্কের সূত্রপাত। ওই গ্রামের ভোটারদের জন্য নির্ধারিত ১৪২ নম্বর বুথে এসআইআর সংক্রান্ত কাজের নজরদারির দায়িত্বে বিজেপির বুথ লেভেল এজেন্ট (BLA) হিসেবে মনোনীত ছিলেন সুশান্ত মণ্ডল। তাঁর সঙ্গে বিজেপির জামালপুর–১ মণ্ডল সভাপতি প্রধানচন্দ্র পাল অভিযোগ করেন, ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যা রুপালী বিশ্বাস ও তাঁর মা দাসী বিশ্বাস আদতে ‘ভুয়া ভারতীয় নাগরিক’ এবং তাঁরা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী।

বিজেপি নেতৃত্ব এই অভিযোগে ব্লক ও জেলা নির্বাচন আধিকারিকের দফতরে লিখিত আবেদন জমা দিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় ১৪২ নম্বর বুথের ৫৩৩ ক্রমিক নম্বরে রুপালী বিশ্বাসের নাম রয়েছে। একই বুথের ৭২৭ ক্রমিক নম্বরে রয়েছে তাঁর মা দাসী বিশ্বাসের নাম। বিজেপির বিএলএ সুশান্ত মণ্ডলের অভিযোগ, রুপালী বিশ্বাসের স্বামী তারক বিশ্বাস তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রথমে বেআইনিভাবে তাঁর স্ত্রীর নাম ভোটার তালিকায় তুলিয়েছেন। পরে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এবং তফসিলি জাতির (SC) শংসাপত্র সংগ্রহ করে রুপালী বিশ্বাস দু’বার পঞ্চায়েত সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

একই সঙ্গে রুপালী বিশ্বাসের মা দাসী বিশ্বাসের বিরুদ্ধেও গুরুতর অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। তাদের দাবি, ২০০২ সালে ভারতীয় ভোটার তালিকায় দাসী বিশ্বাসের নাম ছিল না। পরে ভোটার তালিকায় নাম তোলার সময় তিনি নিজের পিতা, মাতা ও স্বামীর পরিচয় গোপন করেন। পরিবর্তে উত্তর মোহনপুর গ্রামের জগন্নাথ বিশ্বাসকে নিজের ‘আপনজন’ হিসেবে দেখিয়ে নাম নথিভুক্ত করান। যার ফলে ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় দাসী বিশ্বাসের নামের পাশে পিতা-মাতা বা স্বামীর পরিচয় উল্লেখ না থেকে ‘অন্যান্য’ বিভাগে জগন্নাথ বিশ্বাসের নাম রয়েছে। একই ধরনের অনিয়মে গোপীনাথ বিশ্বাস নাকি নিজের পিতা হিসেবে রুপালী বিশ্বাসের শ্বশুর অনিল বিশ্বাসের নাম ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ তুলেছে বিজেপি নেতৃত্ব।

See also  প্রকাশ্যে রাস্তাঘাটে মাংস কাটায় বাড়ছে দৃশ্য দূষণ, শিশুদের মনে পড়ছে প্রভাব

যদিও বিজেপির তোলা সমস্ত অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন রুপালী বিশ্বাস ও তাঁর মা দাসী বিশ্বাস। এই প্রসঙ্গে জামালপুর–১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সাহাবুদ্দিন মণ্ডল বলেন, “২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকেই রুপালী বিশ্বাসকে ফাঁসানোর চক্রান্ত চলছে। সুশান্ত মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী দেবিকা দেবনাথ তখন সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন। ভোটের সময় নিজেরাই বাড়িতে বোমা মেরে তৃণমূলকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। পুলিশি তদন্তে সেই ঘটনা সামনে আসায় সুশান্ত মণ্ডল গ্রেপ্তার হয়ে জেল খাটেন এবং তাঁর স্ত্রী আত্মগোপনে যান। এখন তাঁরা সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ফের একই অপপ্রচার শুরু করেছেন।”

এ বিষয়ে জামালপুরের বিডিও পার্থসারথী দে জানান, প্রাপ্ত অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ১৪২ নম্বর বুথের বিএলও-কে। রিপোর্ট জমা পড়ার পর তা খতিয়ে দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অন্যদিকে বিজেপির জামালপুর–১ মণ্ডল সভাপতি প্রধানচন্দ্র পাল হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সংশোধিত ভোটার তালিকায় যদি ফের রুপালী বিশ্বাস, তাঁর মা দাসী বিশ্বাস কিংবা জগন্নাথ বিশ্বাসের নাম থাকে, তবে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে বিজেপি।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি