বন্যার পরিস্থিতি: ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ
বন্যার কারণ
ডিভিসির (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন) ছাড়া জল এবং কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণের ফলে দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরী নদীর জল বেড়ে গেছে, যার ফলে বাংলা জুড়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া এবং পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর ও রায়না ২ ব্লকের বেশ কিছু অঞ্চল এখন জলমগ্ন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বন্যাকে “ম্যান মেইড বন্যা” বলে অভিহিত করেছেন, যা শাসক-বিরোধী বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অরূপ বিশ্বাসের অভিযোগ
সরাসরি কেন্দ্রের প্রতি আঙুল তুললেন মন্ত্রী
পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বৃহস্পতিবার জামালপুর ও রায়না ২ ব্লকের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বাংলার প্রতি বঞ্চনা করা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে।” অরূপ বিশ্বাসের মতে, বাংলার উৎসবের আগে রাজ্যকে বানভাসী করার পিছনে এক ধরনের “চক্রান্ত” কাজ করছে।
ড্রেজিং-এর সমস্যায় ক্ষোভ
অরূপ বিশ্বাস আরও বলেন যে, দামোদর এবং মুণ্ডেশ্বরী নদীর ড্রেজিং কাজ সঠিকভাবে না হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। তিনি জামালপুরের জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের অমরপুর, শিয়ালী, কোরা, এবং মুইদিপুর এলাকায় ড্রেজিংয়ের অব্যবস্থার জন্যও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ত্রাণ শিবিরে মানুষের অভিযোগ
ত্রাণের অভাবে ক্ষোভ
বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষদের জন্য ত্রাণ শিবির খোলা হলেও, শিয়ালী ও কোরা গ্রামের মহিলারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন যে, পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা তারা পাননি। লক্ষ্মী বাউরি, ফুলেশ্বরী বাউরি, পার্বতী সরেন এবং ফুলমনি মাণ্ডি জানান, শুধুমাত্র মুড়ি এবং জল দিয়ে তাদের সারাটা দিন কাটাতে হয়েছে। তাদের মতে, “সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাহায্য এখনো পুরোপুরি পৌঁছায়নি, এবং তারা এখন সরকারের দিকেই তাকিয়ে আছেন।”
বিজেপির প্রতিক্রিয়া: তৃণমূলের ব্যর্থতা আড়াল করার কৌশল
কেন্দ্রকে দোষারোপের রাজনীতি
বন্যার প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “তৃণমূল সরকার সব ব্যাপারে কেন্দ্রকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে। খরা হোক বা বন্যা, সব ক্ষেত্রেই কেন্দ্রকে দোষারোপ করাটা তৃণমূলের একটি কৌশল হয়ে দাঁড়িয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের চক্রান্তের অভিযোগ এনে জনগণের কাছ থেকে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল।”