কৃষ্ণ সাহা, কৃষকসেতু বাংলা,বর্ধমান: রাজ্যের মুখ্য সচিবের তরফ থেকে বৈধ বালিখাত গুলি থেকে বালি উত্তোলনের নির্দেশিকা জারি হবার পরেই কাজ শুরু। তৎক্ষণাৎ পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসকের নির্দেশানুসারে শনিবার থেকে যে সকল বালিঘাট গুলি বন্ধ ছিল, জোর কদমে কাজ শুরু হয়ে গেছে এখন থেকেই। গলসির অঞ্চলের নিকট শিকারপুরের ৮টি বালিঘাট কে এখনো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন । গত চৌঠা মে রাজ্যের মুখ্যসচিব নির্দেশিকা জারি করে শর্তসাপেক্ষ বালিঘাট গুলিকে খোলার নির্দেশ দিয়েছেন, এমনটাই জানা গেছে জেলা প্রশাসন সূত্রে।
সেই নির্দেশ অনুসারে বালিঘাট গুলি পরিচালনার ক্ষেত্রে সর্বসম্মত ১০দফা শর্ত আরোপ করা হয়। এরপর গত ৮ মে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী এক নির্দেশনামা জারি করে।জেলা পুলিশ সুপার, বনাধিকারীক, সমস্ত মহকুমা শাসক, দামোদর ক্যানেল ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ অফিসার, আসানসোল, দুর্গাপুরে রাজ্য পলিউসন কন্ট্রোল বোর্ডের ইঞ্জিনিয়ার সহ জেলার প্রত্যেক এসডিএল এন্ড এলআরও এবং বিএল এন্ড এলআরও দের সেই নির্দেশের কপি পাঠিয়ে দেন। ৯ মে শনিবার থেকে লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে যাওয়া বালিঘাট গুলিকে পুনরায় সচল করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বালিঘাটের তত্ত্বাবধায়কগন।
লকডাউন চলাকালীন সময়ে বালিঘাট গুলিকে যে সমস্ত শর্তাবলী মানতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা নিম্নে বর্ণিত হলঃ
১. বালি ঘাট গুলোর কাজের জায়গা,অফিস এবং থাকার জায়গা গুলিতে সঠিকভাবে জীবাণুমুক্তির কাজ জারি রাখতে হবে। ২. প্রতিদিন প্রত্যেক শ্রমিক এবং কর্মীদের থার্মাল স্ক্রিনিং করতে হবে। ৩. কন্টেনমেন্ট জোনে বসবাসকারী কেউ বালিঘাট এলাকায় যেকোন শর্তে কাজে আসতে পারবেন না। ৪. কর্মরত শ্রমিক এবং কর্মীদের স্যানিটাইজার এবং মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। এব্যাপারে ঘাট কতৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে। ৫. বালিঘাট এলাকাকেও সঠিকভাবে স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। ৬. নদী থেকে বালি তোলার সময় এবং অস্থায়ী অফিসগুলোতে কাজের সময় সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা আবশ্যিক। ৭. কন্টেনমেন্ট জোনের অধীনে কোন বালিঘাট খোলা বা চালানো যাবে না। ৮. লকডাউন চলাকালীন প্রত্যেক শ্রমিক এবং কর্মীদের পরিচয়পত্র প্রদান করতে হবে কতৃপক্ষকে। পাশাপাশি সেই তালিকা স্থানীয় থানায় জমা করতে হবে। ৯. অনুমোদিত বালিঘাট এলাকার মধ্যেই বালির গাড়ি যাতায়াত করতে পারবে। বালি উত্তোলন এবং গাড়ি যাতায়াত কেবলমাত্র সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত করা যাবে। ১০. উপরিউক্ত যেকোন শর্ত লঙ্ঘন করলে প্রশাসন সেই বালিঘাট বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি লাইসেন্স বাতিল করে দিতে পারবে।
সরকারি নির্দেশ মেনে স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে, এমনটাই জানিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার একাধিক বালিঘাট মালিক।বিশ্বে যেভাবে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে,সে ব্যাপারে যথেষ্ট সর্তকতা অবলম্বন করে তবেই বালিঘাট গুলি ফিরতে পারবে স্বাভাবিক ছন্দে। এছাড়াও রয়েছে সরকারি নির্দেশ। রাজ্যের গ্রীন এবং অরেঞ্জ জোন ছাড়া অন্য কোথাও বালিবোঝাই ট্রাক কিংবা অন্য কোন গাড়ি চলাচল করবে না। তবে একথা বলা যায় বালিঘাট গুলি খোলার পর দিনের-পর-দিন কর্মহীন হয়ে থাকা কিছু মানুষ আবার তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে।