কৃষক সেতু বাংলা (কৃষ্ণ সাহা)
লকডাউনের ফলে ঘোর সংকটে জারবেরা ফুল।জমির ফুল জমিতেই নষ্ট হচ্ছে। পচে যাচ্ছে। আর এতেই মাথায় হাত পূর্ব বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদরের বাসিন্দা গুণধর সাহানার।গত কয়েক বছর হল হল্যাণ্ডের জারবেরা ফুটছে বাংলায়।কার্যত বলা যায় শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমান জেলা উদ্যান পালনে দিশা দেখাচ্ছে জারবেরা ফুলের চাষ করে।
এই জেলায় ধান ,আলু সহ অন্যান্য সবজি ফসলের চাষ পুরো মাত্রায় হলেও ফুল চাষে এই জেলা অনেকটাই পিছিয়ে । তারই মধ্যে ব্যতিক্রম জেলার রায়নার নন্দনপুর গ্রাম।গ্রামের বাসিন্দা গুনধর সাহানা নিজে উদ্যোগে জারবেরা ফুলের চাষ করছেন।তিনি চাষী পরিবাবের ছেলে।কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশুনা করেছেন । নিজের ফ্যাক্টরিও আছে ।তাসত্বেও তাঁর চাষ নিয়ে নতুন কিছু একটা করার উৎসাহ ছিল বরাবরই। প্রথাগত চাষের কথা মাথায় না এনে তিনি গ্রামে নিজের বিশাল জমিতে জারবেরা ফুলের চাষ শুরু করেন। তাঁর সেই উদ্যান এখন ভরে গেছে রঙবেরঙের জারবেরা ফুলে।
কিন্তু ফুলের চাহিদা নাই।লকডাউনের জন্য বাইরে রপ্তানি বন্ধ।তাই গাছের ফুল গাছেই শুকিয়ে যাচ্ছে। ফুলের দোকান খুললেও তাতে কোন লাভ হয় গুণধর বাবুর।রোজ দামী ফুল জমি থেকে তুলে ফেলে দিতে হচ্ছে।জারবেরা চাষ মূলতঃ শীত প্রধান দেশে হয়।কিন্তু সরকারি সাহায্যে গুণধর সাহানা কার্যত অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন দক্ষিণ দামোদরের পাণ্ডব বর্জিত নন্দনপুরে। প্রথাগত চাষের বাইরে গিয়ে উদ্যান পালনে এই জেলার চাষীরা তেমন একটা আগ্রহ দেখান না। জারবেরা ফুলের বাজারে চাহিদাও যথেষ্ট রয়েছে ।
জারবেরা ফুল যেহেতু ঠাণ্ডায় হয় । সেকারণে জমিতে গ্রীন হাউস তৈরি ও টেম্পারেচার কনট্রোল করে এই ফুলের চাষ করা হয়েছে। ঠিকমত টেম্পারেচার কনট্রোল করা গেলে বারোমাসই জারবেরা ফুল ফোটানো সম্ভব। সারাবছর কলকাতার বাজারে এই ফুলের চাহিদা থাকে । তাই ফুল কলকাতায় পাঠান বিক্রীর জন্য । এই ফুল চাষ যথেষ্ট লাভজনক।চাষীরা প্রথাগত চাষের বাইরে গিয়ে উদ্যান পালনে আগ্রহী হলে লাভের মুখ দেখবেনই।
কিন্তু পরিবহন বন্ধ থাকায় রায়নার জারবেরা ফুল কলকাতার বাজারে পৌঁছাতে পারছে না।এখন লাভ তো দূরের কথা খামারে কর্মী রেখে তাঁদের বেতন দেওয়ায় কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ছে গুণধর বাবুর কাছে।