আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

দেবদূত কৌশিক

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

 

দামিনী

পূর্ব বর্ধমানের এক পরিচিত সমাজসেবী মুখ কৌশিক দেব ।আজ বলবো তাকে নিয়েই কিছু কথা । সর্বদা হাসিখুশি এক বিরল ব্যক্তিত্বের অধিকারী মানুষ কৌশিক দেব। তার নামে যাই বলি সেটাই কম বলা হবে । তবুও নিজের কিছু অভিজ্ঞতা আজ তুলে ধরলাম সকলের সামনে ।
মাত্র বছর দুই আগের ঘটনা । তারিখটা ছিল – ২৮/৭/২০২১
আমাদের গ্রামের তখন সঙ্কটজনক অবস্থা । বন্যার প্রকোপে DVC সংলগ্ন এলাকায় সব বাড়ি গলা অবধি জলে ডুবে গেছে । মাটির বাড়ি গুলো হেলে গেছে । প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ১৫০ অসহায় গ্রামবাসীদের আশ্রয় দেওয়া হলো গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে । কিন্তু প্রাণ বাঁচাতে শুধু আশ্রয় পেলেই হয়না ,সাথে চাই খাবার । গ্রামের কর্তব্যরত কর্মকর্তারা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন ওই ১৫০ গ্রামবাসীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার দিয়ে সুস্থ রাখতে। কিন্তু ভাঁড়ার শূন্য প্রায় হয় হয়, তাই খবর পেয়েই বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিভিন্ন খাবার নিয়ে রোজই আসতেন বিদ্যালয়ে ।

 

অসহায় মানুষদের করুণ অবস্থা দেখে মোটেই আমার ভালো লাগতো না। মনে হতো যদি ওদের জন্য কিছু করতে পারতাম খুব ভালো হতো। এমন সময় চোখ গেলো ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্টের অসংখ্য নামের মধ্যে থাকা একটা নামের ওপর । কৌশিক দেব । ব্যাক্তিগত ভাবে না চিনলেও তার কাজকর্ম আমায় মুগ্ধ করতো খুব। স্বার্থহীন, শর্তহীন ভাবে তিনি মানুষের পাশে যেভাবে থাকেন তার নমুনা গুলো দেখেই তার প্রতি শ্রদ্ধা বেড়ে যেত। সেই রাতেই আমি মনে সাহস নিয়ে ওনার সাথে কথা বললাম ।দেখলাম উত্তর এলো ।আমি আমার গ্রামের মানুষদের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কথা তাকে বলতেই তিনি কোনো কিছু না ভেবেই রাজি হয়ে গেলেন আমার গ্রামের পাশে দাঁড়ানোর জন্য । পরের দিন সন্ধ্যায় তিনি ১৫০ জনের খাবার – (ভাত তরকারি ) নিয়ে আমাদের গ্রামের বিদ্যালয়ে হাজির ।

See also  অপরের প্রাণ বাঁচাতে লকডাউনের প্রথম দিনে টোটো নিয়ে পথে নেমে সড়ক পথে পড়ে থাকা কাদা সাফ করলেন টোটো চালক

 

অজান্তেই চোখে একটু খুশির জল এসেছিল।আমার মতো এক অপরিচিতা সাধারণ মানুষের কথা উনি রেখেছেন এটা ভেবে নিজেকে খুব ধন্য মনে হলো । তারপরই তার সাথে আলাপ । এবং আলাপের পরেই যে কোনো বিপদের সময় ,যে কোনো অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য যতবার তাকে বলেছি ততবার তাকে পাশে পেয়েছি ঠিক দেবদূতের মতো। একবার আমার শখ হলো জন্মাষ্টমীর দিন কিছু বাচ্ছাদের তালের বড়া খাওয়াবো ।

 

ওনার কাছে শুধু ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলাম আর কিছু টাকা পাঠিয়েছিলাম ।উনি অফিস থেকে ফেরার পর নিজের হাতে তালের বড়া তৈরি করে স্টেশনের বাচ্ছাদের খাইয়ে এসেছিলেন । মানুষটাকে যত দেখি তার প্রতি শ্রদ্ধা যেনো আরও বেড়ে যায় । রক্ত জোগাড় থেকে শীত বস্ত্র বিতরণ সকল কাজেই তিনি যেনো একাই একশো।
তাকে নিয়ে যতই লিখি সে এক আরব্য উপন্যাসের তালিকা হবে । পূর্ব বর্ধমানের সকলের মধ্যমণি হয়ে থাকুন দেবদূত কৌশিক দেব ।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি