প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান, ৯ অক্টোবর: নাবালক ছেলে ও মেয়ের সামনে নিষ্ঠুর অত্যাচার চালিয়ে স্ত্রী আলিয়া খাতুন কে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার হল স্বামী। ধৃতের নাম মহম্মদ আরমান খান। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার মসাগ্রাম মাঠপাড়ায় ধৃতের বাড়ি। বধূ আলিয়ার মা তহুরা শেখের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বুধবার রাতে আরমান খানকে গ্রেপ্তার করে।খুনের চেষ্টা সহ একাধীক ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ বৃহস্পতিবার ধৃতকে পেশ করে বর্ধমান আদালতে।বিচারক ধৃতকে জেল হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।নিষ্ঠুর আরমান খানের কড়া শাস্তির দাবি করেছেন তাঁর দুই কন্যা ও শাশুড়ি ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,প্রায় ১৩ বছর আগে জামালপুরের কোড়িলি গ্রাম নিবাসী তহুরা শেখের মেয়ে আলিয়া খাতুনের সঙ্গে আরমান খানের বিয়ে হয়। মসাগ্রাম সংলগ্ন আজাপুরে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে আরমানের টায়ার সারাইয়ের দোকান রয়েছে। আরমানের দুই কন্যা ও এক পুত্র ।তারা সবাই নাবালক ।তারা স্কুল পড়ুশুনা করে। তাঁদের বাবা যে ভাবে তাঁদের মায়ের উপর নিষ্ঠুর অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে তা দেখে তারা মর্মাহত। মানসিক ভাবেও তারা যথেষ্ট ভেঙে পড়েছে।তাদের লেখাপড়া শেখা লাটে উঠতে বসেছে। চোখের জল ফেলে দিন কাটানোই এখন তাদের ভবিতব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তহুরা শেখ জানিয়েছেন,তাঁর মেয়ে আলিয়া খাতুনের সংসার জীবন সুখের হয় নি। বিয়ের পর থেকেই স্বামী আরমানের নির্যাতন সহ্য করে আসছে তাঁর মেয়ে আলিয়া।বিগত কয়েকদিন ধরে আলিয়ার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালাচ্ছিল আরমান। বুধবার দুপুরে তা চরমে ওঠে।তহুরা বলেন,’নিজের ব্যবসা পাতি লাটে তুলে দিয়ে আরমান নিত্যদিন তার স্ত্রী আলিয়ার কাছে টাকার দাবি করতো।ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া শেখার খরচ চালানো থেকে শুরু করে সংসারের খরচ চালানো কোন কিছুরই দায় দায়িত্ব আরমান পালন করতো না।
আরমান বুধবার বেলাতেও তাঁর স্ত্রীর কাছে টাকার দাবি করে।ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলতে না পারায় আলিয়া তাঁর স্বামীকে টাকা দিতে পারে না।তহুরা বলেন,টাকা না পেয়ে দুপুরে বাড়িতে এসেই ছেলে মেয়ের সামনেই আরমান তাঁর স্ত্রী আলিয়ার উপর
চড়াও হয়। গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে শ্বাস রোধ করে আলিয়াকে খুনের চেষ্টার পাশাপাশি রড দিয়েও আরমান এলোপাথাড়ি মারে আলিয়াকে ।
প্রতিবেশীরা আলিয়াকে বাঁচাতে গেলে তাদের উপরেও চড়াও হয় আরমান। এমন নিষ্ঠুর আক্রমণে আলিয়া মারাত্মক জখম হয়। এই খবর পেয়ে রক্তাত অবস্থায় আলিয়াকে উদ্ধার করে পুলিশ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।মেয়ের উপর হওয়া এমন নিষ্ঠুর অ্যাচার নিয়ে রাতে তহুরা শেখ জামালপুর থানায় তাঁর জামাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান । ধৃতের ছেলে ও মেয়ে জানিয়েছে, আমাদের মা যাতে প্রাণে বাঁচে তার ব্যবস্থা পুলিশ করুক ।