একটা ঘটনা, আর তার ধাক্কায় রাজ্যের সব স্কুলে শুরু হতে চলেছেন নতুন নিয়ম। বদলে যাচ্ছে অনেক কিছু। বেহালার সরকারি প্রাথমিক স্কুলের ছোট্ট শিশুটির স্কুলে আসার সময় মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোর ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে সকলকে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা কোথায় পৌঁছেছিল তা আমরা সকলেই দেখেছি।
তাতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ভবিষ্যতে এমন বিপদ এড়াতে এবার প্রাথমিক স্কুল থেকেই ছেলে-মেয়েদের ট্রাফিক রুলের পাঠ দেওয়া হবে। এমনকি এটা পৃথক বিষয় হিসেবে প্রাথমিক স্কুলের পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করা যায় কিনা তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
দিন কয়েক আগে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, রাজ্যের সকল প্রাথমিক স্কুলে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক আইন নিয়ে বিশেষ কর্মসূচি শুরু হতে চলেছে। আগেই পাঠ্যসূচিতে পথ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
তবে এবার এই বিষয়ে স্কুল শিক্ষা দফতরের অনুমতি নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ বিশেষ নিরাপত্তা অ্যাডভাইজারি জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমনকি শোনা যাচ্ছে প্রাথমিক স্কুলগুলো দিয়ে শুরু হলেও এই পদক্ষেপ আগামী দিনে রাজ্যের হাই স্কুলগুলিতেও নেওয়া হতে পারে।পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার থেকে প্রতি শনিবার অর্ধদিবস স্কুলের পর ছুটি হয়ে যাবে না। তারপর পথ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক রুল নিয়ে প্রতিটি পড়ুয়ার জন্য একটি স্পেশাল ক্লাস নেওয়া হবে। পাশাপাশি যে নিরাপত্তা অ্যাডভাইজারি জারি করার ভাবনা চিন্তা চলছে তার মূল উদ্দেশ্যই হল, রাজ্যজুড়ে গ্রাম, পাড়া এবং বড় রাস্তার ধারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ঢোকা এবং বেরোনোর সময় ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের নিরাপত্তার বিষয়টি সুনিশ্চিত করা।
এক্ষেত্রে পর্ষদের পক্ষ থেকে কিছু বলা না হলেও একটা বিষয় পরিষ্কার এই নিরাপত্তা অ্যাডভাইজারিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে পুলিশ প্রশাসনের।
জানা গিয়েছে, প্রাথমিক স্কুলগুলির বিষয়ে নিরাপত্তা অ্যাডভাইজারি আনার আগে স্কুল শিক্ষা দফতরের পাশাপাশি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করবে পর্ষদ। এই গোটা বিষয়টা কীভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে সেটা এখন খতিয়ে দেখার কাজ চলছে।
উল্লেখ্য আমেরিকা সহ পশ্চিমা দুনিয়ার বহু দেশে একেবারে নিচু স্তরের স্কুল থেকে পথ নিরাপত্তা, ট্রাফিক রুল ইত্যাদি সংক্রান্ত বিষয়গুলি ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো হয়। ফলে সেখানে মানুষ অনেক বেশি ট্রাফিক রুল মেনে যাতায়াত করেন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তেমনই একটা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে বলে ধারণা করছেন বাংলার শিক্ষাবিদরা।
