আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

লাল ঝান্ডা কাঁধে নিয়েই তৃণমূল প্রার্থীকে লাল সেলাম জানালেন প্রবীন সিপিএম কর্মী

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :- ’খেলা হবে ’শ্লোগান তুলে ভোটের প্রচারে বের হওয়া তৃণমূল প্রর্থীকে লাল ঝান্ডা কাঁধে নিয়েই
‘লাল সেলাম’ জানালেন এক বাম কর্মী। বিনিময়ে তৃণমূল প্রার্থী অলোক মাঝি সৌজন্য দেখিয়ে প্রবীন ওই বাম কর্মী অরবিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় কে হাত জোড় করে প্রণাম জানালেন। উত্তপ্ত বাংলার ভোট রাজনীতির লড়াইয়ের ময়দান।তারই মধ্যে বুধবার বিকালে এমনই এক বিরল রাজনৈতিক সৌজন্য বিনিময়ের দৃশ্য প্রত্যক্ষ করলেন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর বিধানসভার রেরুগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানুষজন। যুযুধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতা ,কর্মী ও প্রার্থীর একে অপরের প্রতি এমন সৌজন্য বিনময় চাক্ষুষ করে কার্যত অভিভূত বেরুগ্রাম এলাকার ভোটাররা । তাঁরা
আবেদন রাখলেন হিংসা হানাহানি দূরে সরিয়ে
এমনই সৌজন্যের পরিবেশে মুখরিত হোক এবারের ভোট উৎসব ।তবে সিপিএমের প্রতি তৃণমূলের এত সৌজন্য বোধ দেখানো নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি ।



তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব জামালপুর বিধানসভা আশনে প্রার্থী করেছে অলোক কুমার মাঝিকে ।তাঁর বিরুদ্ধে বামেরা প্রার্থী করেছে গত বিধানসভা নির্বাচনে জামালপুর আশন থেকে জয়ী হওয়া সমর হাজরা কে । অপর দিকে এই আশনে বিজেপির প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন বলরাম ব্যাপারী ।সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরাই জোরদার প্রচারে নেমে পড়েছেন ।ভেটের প্রচার ঘিরেই এখন জামালপুর সরগরম ।


এদিন বিকালে দলের বহু কর্মী ও সমর্থককে নিয়ে বেরুগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ভোটের প্রচারে বের হন তৃণমূল প্রার্থী অলোক মাঝি ।
হুড খোলা একটি ছোট চারচাকা গাড়িতে
সওয়ার হয়েছিলেন প্রার্থী অলোক মাঝি , ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মেহেমুদ খান ,যুব সভাপতি ভূতনাথ মালিক সহ কয়েকজন ।সেই গাড়ির সামনে ও পিছনে মাইকে বাজছিল ‘খেলা হবে ’ গান । তৃণমূলের কর্মীরাও ‘খেলা হবে ’ শ্লোগানেই প্রচারে ঝড় তোলেন । নসিপুর
থেকে শুরু হওয়া তৃণমূলের ভোট প্রচারের র‍্যালি বেশ কিছু গ্রাম ঘুরে বেরুগ্রাম ঘোষ পাড়ায় পৌছায় ।ওই সময়েই কাঁধে লাল পতাকা নিয়ে এলাকার প্রবীন সিপিএম কর্মী অরবিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় সহকর্মীদের সঙ্গে সেই জায়গায় তাঁর দলের পতাকা লাগানো কাজ করছিলেন। তৃণমূল প্রার্থী অরবিন্দ বাবুকে দেখে হাত জোড় করে প্রণাম জানান । পাশাপাশি তৃণমূল নেতা মেহেমুদ খান ও ভূতনাথ মালিকও হাত নেড়ে প্রবীন এই বামকর্মীকে শুভেচ্ছা জানান। পাল্টা সৌজন্য দেখাতে কাঁধে লাল ঝান্ডা নিয়েই প্রতিদ্বন্দি দলের প্রার্থি ও নেতাদের কমিউনিষ্ট কায়দাতেই লাল সেলাম জানালেন অরবিন্দ বাবু ।একই সঙ্গে তিনি বলেন ,সবাইকে স্বাগতম।এরপর সংবাদ মাধ্যমকে তিনি ,’আমি আমাদের সৌজন্য বোধের রাজনীতি দেখাতে পেরে খুশি’ । এদিকে এমন বিরল ঘটনা চাক্ষুষ করে তৃণমূলের র‍্যালিতে থাকা কর্মী ও সমর্থকদের পাশাপাশি এলাকার সাধারণ মানুষজনও আপ্লুত হন ।তাঁরা উভয় রাজনৈতিক দশের কর্মী ও সমর্থকের সাধুবাদ জানান ।

ভোটের প্রচারে বেরিয়ে এমন সৌজন্য বোধের নিদর্শন তৈরি করতে পেরে খেশি তৃণমূল প্রার্থী
অলোক মাঝি।তিনি বলেন ,’তৃণমূল রাজনৈতিক হিংসায় বিশ্বাস করেনা ।তাই ২০১১ সালে বাম শাসনের অবসান অবসান ঘাটানোর পরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে ছিলেন ‘বদলা নয়- বদল চাই’ । শান্তির বাতাবরণ তৈরির জন্য নেত্রীর নির্দেশেই সর্বত্র রবীন্দ্র সংগীত বাজানো হত । বিরোধীরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ও তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে যতই বিষোদগার ছড়াকনা কেন, সৌজন্য বোধের রাজনীতি থেকে যে তৃণমূল সরে আসে নি সেটাই এদিন তাঁরা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন“। দুই তৃণমূল নেতা মেহেমুদ খান ও ভূতনাথ মালিক বলেন , ‘সৌজন্য বোধে রাজনীতির শিক্ষাতেই শিক্ষিত
প্রতিটা তৃণমূলের কর্মী । তাই এদিনও প্রবীন বাম কর্মী অরবিন্দবাবুর প্রতি সৌজন্য বোধ দেখাতে তাঁরা কেউ পিছপা হননি ’।


জামালপুর বিধানসভার বাম প্রার্থী সমর হাজরা এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন ,আমরাও চাই
রাজনীতি থেকে শিষ্ঠাচার ও সৌজন্য বোধ যেন হারিয়ে না যায় ।যে কোন ব্যক্তি যে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই যুক্ত থাকতে পারেন । তাঁর পছন্দ মতো প্রার্থীকে তিনি ভোট দেবেন ,গনতন্ত্রে এটাই কাঙ্খিত । আমরা বামপন্থিরা সেই মতাদর্শেই বিশ্বাসী । আমরা চাই সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশ গ্রহনে
ভোট উৎসবের চেহারা নিক।’ বিজেপি প্রার্থী বলরাম ব্যাপারী অবশ্য সিপিএম ও তৃণমূলের একে অপরের প্রতি এত সৌজন্য দেখানোকে কটাক্ষ করতে ছাড়েন নি । পাল্টা প্রতিক্রিয়ায়
বলরাম বাবু বলেন ,“সৌজন্যের ঘনঘটা দেখে মনে হচ্ছে বিজেপিকে হারাতে তলে তলে সিপিএম ও তৃণমূল অলিখিত জোট গড়েছে“ ।

See also  অমৃত ভারত অত্যাধুনিক রেলস্টেনের রূপ নিল নদীয়ার কল্যানীর ঘোষপাড়া রেলস্টেশ।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি