প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান :- বাংলা নববর্ষ পালনের ঘনঘটার দিনে ফের ভাগীরথীতে বিপর্যয়।এবার ভাগীরথীতে স্নান করতে নেমে তলিয়ে গেল এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।গাজন সন্ন্যাসীদের তৎপরতায় ভাগীরথী তে তলিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পেল অপর এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ।এমনই এক ঘটনায় রবিবার ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া শহরের আদর্শপল্লী এলাকায়।পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের বাহিনী সারা দিন ধরে ভাগীরথী তোলপাড় করেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুমন মণ্ডলের হদিশ পায় না।এই অবস্থায় চরম উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছে সমনের পরিজন ও আত্মীয়রা ।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে,সুমন মণ্ডলের বাড়ি কাটোয়ার দাঁইহাট শহরের রাজপুকুর পাড় এলাকায় ।তাঁর বাবা সুশান্তবাবু
খরদহে থাকেন । বাবা ও মায়ের সঙ্গে সেখানেই থাকতো উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুমন।বছর ১৬ বয়সী মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অনিক সম্পর্কে সুমনের খুড়তুতো ভাই। সুমন ও অনীক কাটোয়া শহরের আদর্শপল্লী এলাকায় পিসি রীতা হাওলাদারের বাড়িতে এসেছিল চরকের মেলা দেখতে । পিসির বাড়ির ভাড়াটিয়া পরিবারের ষোল বছর বয়সী ছেলে সুবীর সাহাকে সঙ্গে নিয়ে সুমন ও অনীক রবিবার দুপুরে কাটোয়ার মরিঘাটের কাছে ভাগীরথীতে স্নান করত নামে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা অনুযায়ী,“ভাগীরথীতে স্নান করতে নেমে সুমন ও অনীক হঠাৎই গভীর খাদে পড়ে হাবুডুবু খেতে শুরু করে। সেই সময় কাছে পিঠেই স্নান করছিলেন কয়েকজন গাজন সন্ন্যাসী। তারা জলে ঝাঁপ দিয়ে অনীককে ধরে ফেলে তাকে টেনে পাড়ে তুলে নিয়ে আসেন । তারই মধ্যে ভাগীরথীর গভীর জলে
তলিয়ে যায় সুমন।গাজন সন্ন্যাসীরা জলে নেমে বহু খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু তারা সুমনের সন্ধান আর পান না।“

এই খবর পেয়েই সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে বাহীনি ঘটনাস্থলে পৌছায় ।
সারা দিন ধরে তারা ভাগীর্থীর জলে সুমনের খোঁজ চালান । কিন্তু দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে গেলেও সুমনের কোন হদিশ উদ্ধার হয় না । এলাকার বাসিন্দারা এদিন আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন,
ভাগীরথীর ঘাটগুলি এখন যেন মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়ে উঠেছে।মাত্র কয়েকদিন আগে অর্থাৎ ১৭ মার্চ কাটোয়ায় ভাগীরথীর বাজারেঘাটে পূণ্য স্নান করতে নেমে ২২ বছর বয়সী যুবক বিজন কুণ্ডু তলিয়ে যায়।তিনি ছিলেন বাবা মায়ের একমাত্র
সন্তান। জেলার ভাতার থানার ভাটাকুল গ্রামের সেই যুবকের মৃতদেহ পরে বাজারেঘাটের কয়েক কিলোমিটার দূরে ভাগীরথীর জলে ভেসে ওঠে।
এর পর ফের এদিন ভাগীরথীতে স্নান করতে নেমে তলিয়ে গেল এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এত কিছুর পরেও হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের। ভাগীরথীতে স্নানের ঘাটগুলি নিরাপদ জনক করে তোলা না গেলে এমন ঘটনা আরও দেখতে হবে বলে স্থানীয়রা মন্তব্য করেছেন ।