সেদ্ধ চালের সাদা ভাতের সঙ্গে বাঙালির দীর্ঘদিনের একটা অন্তরিক সম্পর্ক রয়েছে ! এদিকে আবার ভাত খেলে মোটা হয়ে যাওয়ার ভয়ও, তাই অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচেতন হতে গিয়ে আমরা অনেকেই ভাত খাওয়া পুরোপুরিভাবে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি ! বিশেষ করে ওজন কমানোর সময় আমরা ভাত খাওয়া একেবারেই ত্যাগ করার কথা ভাবি ! ভাত খেলেই যে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়, তা কিন্তু নয় ! পুষ্টিবিদ বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাতে রয়েছে এমন বেশ কয়েকটি পুষ্টিগুণ যা আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত জরুরি !
নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ভাতের সেবন শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতেও সহায়তা করে !ভাত আমাদের স্বাস্থ্যের কতটা উপকার করে ?ভাতে রয়েছে ফাইবার, ওজন কমাতে পুষ্টিবিদেরা বেশি করে ফাইবার জাতীয় খাদ্য খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ! ফাইবার মলত্যাগ আরও সহজ করতে সহায়তা করে। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় পরিমাণমতো ভাত থাকা উচিত, কারণ ভাতের বদলে গমের রুটি বেশি খেলে শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যামিনো অ্যাসিড এবং ভিটামিন B পাবে না ! ভাতে কোলেস্টেরল এবং ট্রান্স ফ্যাট থাকে না !
ভাত খেলে নাকি কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং এতে নাকি প্রচুর পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাট থাকে, কিন্তু ভাতের মধ্যে কোলেস্টেরল থাকে না ! ভাত হল কার্বোহাইড্রেটের উৎস, যা মূলত সঠিক পরিমাণে খাওয়া হলে কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে ! ফুড অ্যালার্জির ক্ষেত্রে উপকারি বিশ্বব্যাপী, ভাত সবচেয়ে কম অ্যালার্জেনিক খাদ্য হিসেবে বিবেচিত ! যাদের বিভিন্ন খাবারে অ্যালার্জি এবং ইনফেকশন হয়, তাদের জন্য ভাত সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার হতে পারে ! ভাত সহজে হজম হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বিভিন্ন ধরনের দানাশস্য হজম করা মানব শরীরের ক্ষেত্রে বেশ কঠিন !
বেশিরভাগ দানাশস্যের বাইরের আস্তরণ ফাইটিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ হয়, যার ফলে এটি হজম করা তুলনামূলক কঠিন হয় ! ভাত হল সবচেয়ে সহজ হজমযোগ্য শস্য ! বিশেষ করে পালিশ করা চালের বাইরের দিক আবরণহীন হয় ! অ্যামিনো অ্যাসিডের দুর্দান্ত উৎস ! অ্যামিনো অ্যাসিড মানবদেহের কার্যকারিতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ! হ্যাপি-হরমোন নিঃসরণের সহায়ক ভাত খাওয়া মস্তিষ্কের সেরোটোনিন নিঃসরণে সাহায্য করে, যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে এবং মনকে খুশি করতে সহায়তা করে ! এই কারণেই ভাত খেলে মনে খুশি এবং তৃপ্তির অনুভূতি হয় !
রক্তের শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করে ঘি, দই, বিভিন্ন ধরনের কারি, ডাল কিংবা মাছ-মাংসের সাথে ভাতের সেবন, রক্তের শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করতে সহায়তা করে ! অ্যানিমিয়া থেকে রক্ষা করে আপনি যদি রক্তাল্পতা বা অন্যান্য আয়রনের অভাবজনিত রোগে ভুগছেন, তবে আপনার প্রতিদিনের খাবারে ভাত অন্তর্ভুক্ত করুন ! সাদা এবং ব্রাউন উভয় চালেই প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ফোলেট রয়েছে, যা মানবদেহের কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য !