আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

জলাধার থেকে ছাড়া জলের চাপে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হল পূর্ব বর্ধমানের বেশ কিছু এলাকা

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :- কয়েকদিনের লাগাতার বর্ষণের জেরে জলস্তর বেড়েছিল নদ-নদীতে ।তার উপর জলাধার গুলি থেকে দফায় দফায় জল ছাড়ার কারণে
দামোদর, মুণ্ডেশ্বরী ,অজয় ,ভাগীরথী সহ সব নদি এখন জলে টইটুম্বুর।নদির জল উপচে পড়ায় পূর্ব বর্ধমান জেলার আউসগ্রাম, কাটোয়া,মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম ,রায়না ও জামালপুরের বেশ কিছু গ্রাম জলপ্লাবিত হয়ে পড়েছে।পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনিক তৎপরতা জারি থাকলেও দুর্ভোগ চরমে উঠেছে জেলার বাসিন্দাদের ।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে বৃহস্পতিবার দামোদরে ২ লক্ষ ৪ হাজার ৩৮৬ কিউসেক জল ছাড়া হয় । এর পর এদিন দু’ দফায় ৪ লক্ষের বেশী কিউসেক জল ছাড়া হয় দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে। তারপর থেকেই বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করে দামোদরের জল । পরিস্থিতি ভয়ংকর হতে পারে এমন আশংকা করে বৃহস্পতিবারই প্রশাসনের তরফে নদি তীরবর্তী এলাকায় মাইকে প্রচার চালানো হয় । তৈরি রাখা হয় ফ্লাড সেন্টার সহ যে কোন ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলার ব্যবস্থা ।

বৃহস্পতিবার ঝাড়খণ্ডের শিকাটিয়া ও হিংলো ব্যারেজ থেকে প্রায় দেড় লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার জন্যে দুপুরের পর থেকে আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম ও কাটোয়ায় জল বাড়তে শুরু করে। অজয় নদে জল বাড়তে শুরু করায় ওই দিন থেকেই আউসগ্রাম ও মঙ্গলকোটের মানুষজনের উৎকণ্ঠা বাড়তে শুরু করে। জল বেড়ে যাওয়ায় মঙ্গলকোটের কল্যাণপুরে অজয়ের চরে একটি গাছে আটকে পড়া তিনজন গ্রামবাসীকে গভীর রাতে উদ্ধার করে এনডিআরএফ টিম ।

ওই রাতেই দ্বারকেশ্বরের জল বড়ে যাওয়ায় রায়না ২ ব্লকের উচালন পঞ্চায়েতের একলক্ষী সহ আশেপাশের গ্রাম গুলি জলপ্লাবিত হয়ে পড়ে ।ওই গ্রামগুলির ৫০ -৬০ ঘর বাসিন্দা ও তাঁদের গবাদি পশু গুলিকে রাতেই স্থানীয় বিদ্যালয় গুলিতে এনে রাখা হয় ।এরপর শুক্রবার ভোর রাত থেকে পরিস্থিতি উদ্বেগ জনক হয়ে পড়ে জেলার আউসগ্রাম, মঙ্গলকোট ,কেতুগ্রাম,কাটোয়া ও জামালপুরের কিছু এলাকায় ।

See also  স্বামী পরকীয়ায় মত্ত!ব্যস্ত মোবাইলে!স্ত্রীকে মারধর করে ঘরছাড়া করলেন স্বামী ও শ্বাশুড়ী, শ্বশুরবাড়িতে ধর্নায় দুই সন্তানের মা

অজয় নদের বাঁধ ভেঙে প্রবল গতীতে জল ঢুকতে শুরু করায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন কেতুগ্রামের বিল্লগ্রাম এলাকার বাসিন্দারা ।
একই ভাবে আউসগ্রামের সাঁতল ধুকুর গ্রামের কাছে অজয় নদের বাঁধের ফাটল বড় আকার নেওয়ায় সেখান দিয়ে জল ঢুকে বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়ে । আতঙ্কে ঘড়বাড়ি ছাড়তে শুরু করেদেন বাসিন্দারা । কেতুগ্রামের পাঁচটি জায়গায় বাঁধ ভেঙে জল ঢুকতে শুরু করে।বিল্লেশ্বর, রসুই, ত্যাওড়া, চড়খি এলাকার বাসিন্দারা বালির বস্তা ফেলে বাঁধ রোখার চেষ্টা করলেও তা বিফলে যায়। কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোটের বিস্তীর্ণ এলাকার দুর্গতদের বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে এনডিআরএফ ও প্রশাসন উদ্ধার করে।

আউসগ্রামে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর সিভিল ডিফেন্সের লোকজন সাঁতলা ,বুধরো ও ডুকোর এলাকার মানুষজনকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যান।জামালপুরের জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের দামোদর তীরবর্তী কিছু গ্রামে জল ঢুকেতে শুরু করায় বালির বস্তা ফেলে জল ঢোকা বন্ধের ব্যবস্থা করা হয় । জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত জেলার ১৫টি ব্লকের একাংশ জলমগ্ন হয়।

শুক্রবার সন্ধে পর্যন্ত জেলার ৯টি ব্লকের ৫৭ টি গ্রামে জল রয়েছে।এদিন পর্যন্ত জেলায় ৩৩টি ত্রাণ শিবির খুলতে হয়েছে। সেখানে প্রায় ৪ হাজার বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যা-পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ও সুষ্ঠুভাবে ত্রাণ যাতে পৌছে দেওয়া যায় সেই কাজ তদারকি করতে শনিবার রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বর্ধমানে আসাছেন বলে খবর মিলেছে ।জেলার বহু জায়গায় ফসলের জমি জলে ভরেছে । সবজি চাষে প্রভূত ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষি দফতর ।

জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা এদিন আউসগ্রাম ২ ব্লকে বন্যা পরিস্থিতি সরজমিনে দেখতে যান। জেলাশাসক এদিন বলেন ,“জল নামতে শুরু করেছে। যে সব জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে সেখানে জল নামলে সেচ দফতর কাজ শুরু করবে।বেশ কয়েকটি জায়গায় ত্রাণ শিবার খোলা হয়েছে । খাবার ও জলের পাউচ দেওয়া হচ্ছে । পরিস্থিতির দিকে প্রতিনিয়ত নজর রয়েছে।“

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি