প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :- এযেন সেনাপতিতে অন্ধকারে রেখেই সৈন্য নির্বাচন কাণ্ড।এই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের এখনও ঢের দেরি রয়েছে।তার আগে তৃণমূল নেত্রীর অজ্ঞাতেই ঘোষনা করে দেওয়াহল ২৬২ জামালপুর(তপঃ ) বিধানসভা আশনের তৃণমূল প্রর্থীর নাম।আর এই ঘোষনা নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের অন্দরে ব্যাপক শোরগোল পড়েগেছে।দলের নিয়ম কানুন না মেনেই প্রার্থীর নাম ঘোষনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলেরই একাংশ।তারা এই ঘোষনার বিষটি নিয়ে তৃণমূলের উর্ধ্বতন নেতৃত্বেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ।
বাংলার গর্ব মমতা কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে রবিবার জামালপুরের চকদিঘীর তৃণমূল পার্টি অফিসে স্বীকৃতি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।সেই সম্মেলনে জেলা তৃণমূল যুব কার্যকরী সভাপতি শ্রীমন্ত রায় ,ব্লক তৃণমূল সভাপতি অরবিন্দ ভট্টাচার্য্য এবং গত বিধানসভা নির্বাচনে জামালপুর বিধানসভা আশনে পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল প্রামাণিক উপস্থিত থাকেন। সম্মেলনে বহু কর্মী সমর্থক ও নেতা নেত্রী যোগদেন করেছিলেন ।ওই সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে উঠে শ্রীমন্ত রায় ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে জমালপুর বিধানসভা আশনে প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে উজ্জ্বল প্রামাণিকের নাম তুলে ধরেন । শ্রীমন্ত ঘোষনা করেন “২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে আমরা আমাদের প্রার্থী উজ্জ্বল প্রামাণিককের হয়ে লড়াইয়ে নামবো। ২০২১ নির্বাচনে উজ্জ্বল প্রামাণিককে জয়ী করে আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে যাবো।” সম্মেলনে উপস্থিত সকলে করতালি দিয়ে শ্রীমন্ত রায়ের এই ঘোষনাকে স্বাগত জানান । প্রার্থীর নাম ঘোষনার বিষটি আবার সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে দেওয়া হয় । আর এর পরেই শোরগোল পড়েযায় জেলা তৃণমূলের অন্দরেই।ক্ষোভ বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে জামালপুরে উজ্জ্বল বিরোধী শিবিরের নেতা ও কর্মী মহলেও ।
এই ঘোষনা বিষয়ে সোমবার শ্রীমন্ত রায়ের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন ,২০১১ও ২০১৬ সালে উজ্জ্বল প্রামাণিক দলের প্রার্থী হয়েছিলেন ।তাহলে তাঁকে প্রার্থী বলায় আমার কি ভুল হয়েছে বলতে পারবো না । আমার বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করা হলে আমার কিছু করার নেই । যদিও উজ্জ্বল প্রামাণিক পরিস্কার জানিয়েদেন , শ্রীমন্ত ভুল করে বলে থাকতে পারে । বিধানসভা ভোটের এখনও অনেক দেরি আছে । কে প্রার্থী হবে সেটা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করবেন । আবেগে কে কি বলেছে সেটাকে গুরুত্ব দেবার কিছু আছে বলে আমি মনেকরি না । একই সঙ্গে উজ্জ্বল বাবু বলেন , যারা ভুল ধরিয়ে দিয়েছে তাদের আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি ।
প্রসঙ্গত রাজ্য রাজনীতিতে পালা বদলের সময়ে ২০১১ সালে জামালপুরের তৃণমূল প্রর্থী হয়ে ভোটে লড়েন উজ্জ্বল প্রামাণিক । সেবার তিনি জয়ী হন। এরপর কয়েক বছর যেতে না যেতেই উজ্জ্বল প্রামাণিকের সঙ্গে জামালপুরের যুব তৃণমূল নেতা মেহেমুদ খানের সম্পর্কে ফাটল ধরে। গোষ্ঠী কোন্দলের জরে ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে জামালপুর আশনটি তৃণমূলের হাতছাড়া হয় । বাম প্রার্থী সমর হাজরার কাছে পরাজিত হন উজ্জ্বল বাবু ।অন্যদিকে মেহেমুদ খান এখন জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। সামনেই পুরসভা ভোট । তার পরেই বছর ঘুরলে হবে বিধানসভা নির্বাচন । কিন্তু আজ অবধী দুই নেতার বিরোধ জিয়েই রয়েছে । গোষ্ঠী কোন্দল মেটানোর কোন উদ্যোগও দলীয় স্তরেও নেওয়া হয়নি।এমন পরিস্থিতির মধ্যে শুধুমাত্র জামালপুর আশনে প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থীর নাম আগাম ঘোষনা করা হয়। তার পরথেকে জামালপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল আরো বেআব্রু হয়ে পড়েছে ।
এদিন মেহেমুদ খান বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে আজ অবধি যত ভোট হয়েছে সব ভোটেই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থীদের নাম ঘোষনা করেছেন। রবিবার যিনি জামালপুর বিধানসভা আসনে তৃণমূল প্রার্থীর নাম ঘোষনা করেলেন তিনি দল বিরোধী কাজ করেছেন।উনি হয়তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
থেকেও উর্ধ্বে যেতে চাইছেন ।
krishna Saha
আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি