বৃহস্পতিবার বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা বিজেপির কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্য বিজেপির অফিস সম্পাদক প্রণয় রায় তৃণমূল সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, রাজ্যে টানা ১৫ বছর ধরে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় থাকলেও শিল্পায়নের বাস্তব চিত্র আজও অধরা। প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে বিজনেস সামিট হলেও সেখানে বড় শিল্পপতিদের সঙ্গে মৌ-স্বাক্ষর ও প্রতিশ্রুতির বাইরে বাস্তব ক্ষেত্রে শিল্প স্থাপনের কোনও রূপায়ণ দেখা যায় না।
প্রণয় রায় জানান, এই তথ্যগুলি তুলে ধরে বিজেপির পক্ষ থেকে একটি তথ্যসমৃদ্ধ পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক’ লেখা সাইনবোর্ড থাকলেও সেখানে কোনও নির্মাণকাজ বা শিল্প কার্যকলাপ নেই। একইভাবে জাতীয় সড়কের পাশে ঘোষিত ‘ল্যাংচা হাব’ বা মিষ্টি হাবেও কোনও উৎপাদন বা ব্যবসা চলছে না। তাঁর দাবি, গত ১৫ বছর ধরে রাজ্য সরকার কেবল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তার কোনও কার্যকর রূপায়ণ হয়নি।
এর ফলেই, শিক্ষিত যুবসমাজ বিশেষ করে বিটেক পাশ তরুণ-তরুণীরা কাজের সন্ধানে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে অন্য রাজ্যে যেতে বাধ্য হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিল্পনীতি নিয়েও প্রশ্ন তুলে প্রণয় রায় বলেন, রাজ্যকে গুজরাট বা মহারাষ্ট্রের মতো হতে দেবেন না—এই বক্তব্যের মধ্যেই শিল্পবিরোধী মানসিকতা স্পষ্ট। তাঁর দাবি, টাটা প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সেই শিল্প গুজরাটের সানন্দে গিয়ে গড়ে উঠেছে, যা বাংলার শিল্প সম্ভাবনাকে ধাক্কা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিজেপির লক্ষ্য ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার গঠন করা। গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের শিল্প মডেল অনুসরণ করে রাজ্যে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের পথ সুগম করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
বর্ধমান জেলা প্রসঙ্গে প্রণয় রায়ের অভিযোগ, এখানে ঘোষিত শিল্প প্রকল্পগুলির কোনওটাই বাস্তবায়িত হয়নি। শিল্পের নামে চলছে অবৈধ বালি খাদান ও বালি ব্যবসা।
ভোটার তালিকা সংশোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করাই বিজেপির লক্ষ্য। কোনও রোহিঙ্গা বা অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর নাম যাতে তালিকায় না থাকে এবং কোনও যোগ্য ভোটারের নাম বাদ না পড়ে, সে বিষয়ে দল সতর্ক রয়েছে। তাঁর দাবি, খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়া প্রায় ৫৮ লক্ষ নাম মূলত মৃত, স্থানান্তরিত অথবা যাচাই না হওয়া ভোটারদের। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর প্রায় এক কোটি নাম বাদ যেতে পারে বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন।








