উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি: ৫ দিনে বাঘের কামড়ে মৃত দুই মৎস্যজীবি সুন্দরবনে।এবার কাঁকড়া ধরার সময় সুন্দরবনে নৌকা থেকে মৎস্যজীবীকে টেনে গিয়ে গেল বাঘ।মৃত ব্যক্তির নাম তাপস হালদার।বাড়ি কুলতলির মৈপীঠ উপকূল থানা এলাকার নগেনাবাদ গ্রামে।মঙ্গলবার সকালে ৫২ বছরের তাপস হালদার, গোপাল পাইক, ও নেপাল পাইকের সঙ্গে কাঁকড়া ধরতে নৌকায় রওনা হয়েছিলেন।
শুক্রবার বেলায় সুন্দরবনের বনি ক্যাম্প লাগোয়া সিঁদুরকাটি জঙ্গল এলাকায় তাঁরা কাঁকড়াধরছিলেন। জঙ্গলের দিকে পিছন ফিরে ছিলেন তাপস হালদার।ম্যানগ্রোভ অরণ্যে যে বিপদ ওত পেতে রয়েছে,তা কেউ খেয়ালই করেননি। দুই সঙ্গী জলে নেমে কাঁকড়া ধরছিলেন।নৌকায় একাই বসেছিলেন তাপস।সেসময় একটি বাঘ বন থেকে বেরিয়ে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে তাঁকে টেনে নিয়ে জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে যায়।

চোখের সামনে সঙ্গীকে বাঘ টেনে নিয়ে যাচ্ছে দেখে অন্য দু’জন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। পরে তাঁরা চিৎকার শুরু করলে আশপাশ থেকে বেশ কয়েকজন মৎস্যজীবী ঘটনাস্থলে পৌঁছান। জঙ্গলের ভিতর গিয়ে তাপস হালদারের খোঁজও চালানো হয়। কিন্তু তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে সঙ্গীরা গ্রামের দিকে নৌকায় রওনা হন। রাতে তাঁরা গ্রামে ফিরে আসেন।আর এই ঘটনার কথা গ্রামবাসীদের জানানো হয়।
আর এই দুঃসংবাদ শুনে কান্নার রোল ওঠে তাপস হালদারের পরিবারে। খবর দেওয়া হয় বনদপ্তরেও।শনিবার ভোর থেকে নিখোঁজ ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি শুরু করে বন দফতর।অবশেষে শনিবার দুপুরে বনি ক্যাম্প লাগোয়া সিদুর কাটির জঙ্গল থেকে তাপস হালদারের দেহ উদ্ধার করে বন দফতর।নিয়ে আসা হয় জয়নগর কুলতলি গ্রামীন হাসপাতালের মর্গে।রবিবার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে বলে পুলিশ সূএে জানা গেল।

প্রসঙ্গত, দিন পাঁচেক আগে একইভাবে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে সুন্দরবনে বাঘের হানায় মারা গিয়েছেন কুলতলির শম্ভু সরদার নামে এক যুবক। সোমবার সকালে সুন্দরবনের চামটা জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় ওই বাঘের হানার ঘটনা ঘটেছিল। বাঘের হানায় মৃত্যুর ঘটনায় ক্রমে আতঙ্ক বাড়ছে সুন্দরবনের সাধারণ বাসিন্দারা।সুন্দরবনে বাঘে আক্রান্ত পরিবারদের পাশে থেকে কাজ করে চলেছে এপিডিআর নামে একটি মানবাধিকার সংগঠন। তাদের দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলার সহ সম্পাদক মিঠুন মন্ডল শনিবার বলেন,এবছরে এই নিয়ে এখনো পর্যন্ত ২০ জন বাঘে আক্রান্ত হলো।
যার মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যু ঘটে গেছে।গত ৫ দিনে দুজনের মৃত্যু ঘটলো বাঘের আক্রমনে। আমাদের দাবি, মৃতের পরিবারকে দ্রুত সরকারি ক্ষতিপূরনের টাকা তুলে দিতে হবে।পরিবারের একজনকে চাকরি ও মৃতের সন্তানের পড়াশোনার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।








