কৃষ্ণ সাহা, পূর্ব বর্ধমান: ঘূর্ণিঝড় মন্থার প্রভাবে প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার শস্যগোলার গর্ব — সুগন্ধি গোবিন্দভোগ ধান। জেলার রায়না, খণ্ডঘোষ, জামালপুরসহ দক্ষিণ দামোদর তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকায় এই বিশেষ প্রজাতির ধান চাষ হয়, যা মূলত বর্ধমানের কৃষকদের অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে তোলে। কিন্তু এবারে প্রকৃতির রোষে সে স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছে।

চাষিদের অভিযোগ, ফলন ভালো হলেও ঘূর্ণিঝড় মন্থার প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার কারণে বহু জমির ধান গাছ মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। এতে ধানের শীষ মাটির সংস্পর্শে এসে পচে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যাবে বলেই মনে করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
রায়না ব্লকের এক কৃষক জানান, “এক বিঘা জমিতে সাধারণত ১০-১২ বস্তা ধান পাওয়া যায়। কিন্তু এখন যা অবস্থা, তিন থেকে চার বস্তার বেশি ধান তোলা সম্ভব হবে না।”
গোবিন্দভোগ চাষে বিঘা প্রতি প্রায় ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। অনেকেই এই টাকা ব্যাংক ও মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু এবারের দুর্যোগে তাদের মাথায় হাত। “যেটুকু ধান পাবো, তাতে চাষের খরচও উঠবে না,” বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন খণ্ডঘোষের এক কৃষক।

পূর্ব বর্ধমান জেলার এই জনপ্রিয় গোবিন্দভোগ ধান রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ও রাজ্যের বাইরে ব্যাপক চাহিদা রাখে। কিন্তু এবারের ক্ষতি কৃষকদের আর্থিকভাবে চরম বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।
কৃষি দপ্তরের তরফে এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দামোদর এলাকার একাধিক ব্লকে ধানক্ষেত নষ্ট হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রশাসনের তরফে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা এখন সরকারের সাহায্যের আশায় চেয়ে রয়েছেন।
কৃষ্ণ সাহার রিপোর্ট কৃষকসেতু নিউজ বাংলা বাংলার মাঝে খবরের খোঁজে








