চাপের মুখেও নরম হলেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের উদ্দেশে তাঁর সাফ বার্তা— ছাড় দেওয়া হবে না। চিনের তিয়ানজিনে এসসিও শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আলাদা বৈঠক করে বার্তা দিলেন ওয়াশিংটনকে। কিন্তু তাতে বিচলিত নন ট্রাম্প। তাঁর কড়া মন্তব্য, ‘একতরফা ব্যবসা করে যাচ্ছিল ভারত, এখন দেরি হয়ে গিয়েছে’। অর্থাৎ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনওভাবেই ভারতীয় পণ্যের উপর আরোপিত শাস্তিমূলক শুল্ক তুলে নেবে না।
এদিন ট্রাম্পের বক্তব্য, “ওরা (ভারত) এখন (মার্কিন পণ্য) শুল্কশূন্য করার প্রস্তাব দিচ্ছে। এটা ওদের অনেক আগেই করা উচিত ছিল।” এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। ইন্দো-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্ককে সরাসরি একপাক্ষিক ব্যর্থতা আখ্যা দিয়ে ট্রুথ সোশালে পোস্ট করে লেখেন, ‘‘খুব কম মানুষই বোঝেন যে আমরা ভারতের সঙ্গে খুব কম ব্যবসা করি। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে ব্যবসা করে। সোজা কথায় বলতে গেলে, ভারত আমাদের কাছে প্রচুর পরিমাণে পণ্য বিক্রি করে। আমরা তাদের সবচেয়ে বড় গ্রাহক (ক্লায়েন্ট)। কিন্তু আমরা তাদের খুব কম পরিমাণ পণ্য বিক্রি করি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘ভারত এখন আমাদের উপর এত বেশি শুল্ক আরোপ করেছে, যা অন্য যে কোনও দেশের তুলনায় সর্বোচ্চ। আমরা আমাদের পণ্য ভারতে বিক্রি করতে অক্ষম। এটি সম্পূর্ণ একতরফা বিপর্যয়!’’

উল্লেখ্য, প্রথমে ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপায় ট্রাম্প প্রশাসন। পরে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি চালু রাখায় অতিরিক্ত আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হয়। পাশাপাশি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেয় ওয়াশিংটন— যদি মস্কোর সঙ্গে তেল কেনাবেচা অব্যাহত থাকে, তবে দ্বিতীয় দফার নিষেধাজ্ঞা আসবেই।
এদিকে, হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পিটার নাভারো মন্তব্য করেন, “ইউক্রেনে শান্তির রাস্তা দিল্লি দিয়েই যায়।” তাঁর এই মন্তব্য থেকেই পরিষ্কার, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের আবহে ভারতকে চাপের মধ্যে রাখতে মার্কিন প্রশাসন ক্রমাগত বাণিজ্যিক চাপ বাড়াচ্ছে। যদিও ভারতের পাল্টা দাবি, এই শুল্ক আরোপ অযৌক্তিক এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতির বিরোধী। সরকারি মহলের আশা, দেশীয় বাজার ও বিকল্প কৌশলকে ভর করে চাপ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে ভারতীয় অর্থনীতি।