প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ২১ আগষ্ট

হাসপাতালে চিকিৎসা করানো আর হল না ।পথে বেপরোয়া গতীর যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন স্কুটিতে সওয়ার অসুস্থ বাবা ও তাঁর মেয়ে সহ তিনজন।বৃহস্পতিবার বেলায় মর্মান্তিই এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনার ধাত্রীগ্রামে কালনা-নবদ্বীপ রোডে মৃতরা হলেন ফরজ মল্লিক (৫৪), নূরজাহান খাতুন (২০), ফারহানা খাতুন (১৮)। মৃতদের বাড়ি কালনা মহকুমার নাদনঘাট ও কালনা থানা এলাকায়।এদিনই কালনা হাসপাতাল মর্গে তিন মৃতর দেহের ময়নাতদন্ত হয় । দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস ও স্কুটি আটক করে পুলিশ দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নাদনঘাট থানার ধামাই এলাকায় বাড়ি ফরজ মল্লিকের।তিনি বছর দুই আগে স্থানীয় উত্তরডিহি এলাকার এক যুবকের সঙ্গে তাঁর মেয়ে নূরজাহানের বিয়ে দেন । ফারহান সম্পর্কে নূরজাহানের মামাতো বন।কালনা থানার বেগপুর পঞ্চায়েত এলাকায় তার বাড়ি। ফারহান মুড়াগাছা গর্ভমেন্ট কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
পরিবার সদস্যদের কথায় জানা গিয়েছে,কিছুদিন যাবৎ ফরজ মল্লিকের শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না।
তাই এদিন তিনি কালনা হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । সেই মত বেলায় মেয়ে নূরজাহান খাতুন ও আত্মীয় ফারহানা খাতুন কে সঙ্গে নিয়ে ফরজ মল্লিক স্কুটিতে চেপে কালনা হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। ওইসময় কালনার ধাত্রীগ্রামের বড় স্বরাজপুর এলাকায় একটি বাসের সঙ্গে তাদের স্কুটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তাতে
দুমড়ে-মুচড়ে যায় স্কুটিটি । আর স্কুটিতে সওয়ার থাকা তিন আরোহী রাস্তার উপর ছিটকে পড়েন।
এই দুর্ঘটনার পরেই স্থানীয় মানুষজন রক্তাত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকা স্কুটির তিন আরোহীকে
উদ্ধার করে কালনা হাসপাতালে নিয়ে যান ।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফরজ মল্লিক ও তাঁর মেয়ে নূরজাহান খাতুনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এর খানিক পরেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা নূরজাহানের মামাতো বোন ফারহানা খাতুন মারা যান।
একই দিনে একসঙ্গে পরিবারের তিনজনের এমধ মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন পরিবার সদস্যরা।মৃত ফরজ মল্লিকের ছেলে নূর হাসান বলেন, “ বাবা ও বোন স্কুটিতে চেপে কালনা হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিল। ওই স্কুটিতে আমাদের মামাতো বোনও ছিল। মামাতো বোন আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। একটি বাস বেপোরোয়াভাবে স্কুটিতে ধাক্কা মারে।তাতে তিনজনেরই মৃত্যু হয় “।
কালনা পুলিশের ট্র্যাফিক ওসি অতনু বোস বলেন, “ এদিনের দুর্ঘটনায় জখম বাইক আরোহীদের মাথাতেই চোট বেশি লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। তাদের মাথায় কোনও হেলমেট ছিলনা। মাথায় হেলমেট থাকলে তারা হয়তো প্রাণে বেঁচে যেতেন।’“বেপোরোয়া গতীতে যানবাহন চলাচল নিয়ে এদিন সরব হন এলাকার বাসিন্দারা।